রাজধানীর বাংলামোটরের সন্তান হত্যাকারী সন্দেহে পিতাকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় তার আরেক সন্তানকে উদ্ধার করা হয়। ওই ব্যক্তির নাম নুরুজ্জামান কাজল। নিহত শিশুর নাম নূর সাফায়েত। তার বয়স আনুমানিক আড়াই বছর।
আজ বুধবার বাংলামোটরে নুরুজ্জামান কাজল নামের ওই ব্যক্তি তার সন্তানকে হত্যা করেন বলে জানায় এলাকাবাসি। বাংলামোটরে অবস্থিত বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল যমুনা টেলিভিশনের সাব-অফিসের পাশে ওই ভবনে দুই সন্তান নিয়ে তিনি বসবাস করতেন। শিশু হত্যার খবর পেয়ে, সকাল থেকেই ভবনটি ঘিরে রাখে পুলিশ ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। দীর্ঘ চেষ্টার পর নুরুজ্জামান কাজলকে আটক করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান জানান, 'ওই বাসা থেকে একটি শিশুকে জীবিত ও অন্য শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত শিশুর বাবাকে আটক করা হয়েছে।'
এর আগে, র্যাব উপপরিদর্শক (এসআই) শরিফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, ‘আমি ভেতরে ঢুকে দেখি, নুরুজ্জামান কাজল তার ছোট শিশুকে কাফনের কাপড় পরিয়ে টি টেবিলের ওপর রেখেছেন। আর বড় সন্তানকে বুকে জড়িয়ে হাতে বড় রামদা নিয়ে বসে আছেন।’
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলেন, ‘শিশুর বাবা এর আগে মাদক গ্রহণের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। জেলেও পাঠানো হয়েছিলো তাকে।’
স্থানীয়রা জানান, কয়েক মাস আগে স্ত্রীকেও মারধর করেছিলেন তিনি। নির্যাতনের কারণে তার স্ত্রী চলে যান এবং বাচ্চা দু'টো কাজলের সঙ্গেই ছিলো। এদিকে মনু মেম্বারের পরিবারের ভালো নাম থাকলেও কাজলের আচার-আচরণের জন্য পরিবারের সদস্যরা তাঁর ওপর বিরক্ত ছিলেন বলে জানিয়েছে তার স্বজনরা।
কাজলের ভাই নুরুল হুদা উজ্জ্বল জানান, ‘সকাল সাড়ে সাতটার দিকে কাজল বাসা থেকে বের হয়ে পাশের এক মাদ্রাসায় গিয়ে জানান, তাঁর ছোট ছেলে নূর সাফায়েত বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে। এটা যেন মাইকে ঘোষণা করা হয়। তারপর মাদ্রাসার ছাত্রদের পবিত্র কোরআন খতম দেয়ার জন্য নিয়ে যেতে চান। এ কথা শোনার পর আবদুল গাফফার নামে একজন খাদেম মাদ্রাসা থেকে তার সঙ্গে যান।
তিনি বলেন, ‘মাইকে সংবাদ শুনে আমি আসি। ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করি। কিন্তু কাজল ঢুকতে দেননি। দরজা আটকে রেখেছিলেন তিনি। কাজলের সঙ্গে তার বড় ছেলে সুরায়েত (৪) আছে।’