ওয়ানডেতে বেশকিছু দিন থেকে বাংলাদেশ অনেক ভালো দল। সমর্থক থেকে শুরু করে অনেক ক্রিকেট বোদ্ধাই এটা মেনে নেন অনেকটা প্রশ্ন ছাড়াই। কিন্তু সেই বাংলাদেশই যেন জিম্বাবুয়েতে খেই হারিয়ে ফেলল। টি-টোয়েন্টিতে সিরিজ হারের পর ওয়ানডে সিরিজও শুরু হলো হার দিয়ে।
তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ইনোসেন্ট কাইয়া ও সিকান্দার রাজার জোড়া সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশকে ৫ উইকেটে হারাল জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের দেয়া ৩০৪ রানের টার্গেট ১০ বল হাতে রেখেই টপকে যায় তারা।
জিম্বাবুয়ের ইনিংসের শুরুতেই আঘাত হানে মুস্তাফিজুর রহমান। মাত্র ২ রানেই এক উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। এরপরের ওভারের পঞ্চম বলেই মুসাকান্দাকে নিজের শিকার বানিয়ে ফেরান শরিফুল ইসলাম। জিম্বাবুয়ে তখন ৬ রানে ২ উইকেট হারিয়ে পড়ে বিপাকে। এরপর আর সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশি বোলাররা।
তবে দলীয় ৬২ রানের মাথায় জিম্বাবুয়ে হারায় আরও একটি উইকেট। রান আউট হয়ে ফিরে যান মাধেভেরে। এরপরই শুরু হয় জিম্বাবুয়ের রূপ কথার গল্প লেখার স্বপ্ন দেখা। কাইয়া ও রাজার ব্যাটে ভর করে এগুতে থাকে জিম্বাবুয়ে। তারা দুজনে মিলে গড়েন ১৯২ রানের জুটি।
অবশেষে ৪২তম ওভারে বাংলাদেশ ভাঙতে পারে কাইয়া ও রাজার ১৯২ রানের জুটি। মোসাদ্দেকের বলে শরিফুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে কাইয়া যখন ফিরে যান তখন তার নামের পাশে ১১০ রানের ঝলমলে ইনিংস। পেয়ে যান ওয়ানডেতে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। জিম্বাবুয়ের তখন ২৪৫ রানে ৪ উইকেট।
উইকেট হারালেও ম্যাচেই ছিল জিম্বাবুয়ে। কারণ, তখনও ব্যাট করছিলেন আরেক সেঞ্চুরিয়ান সিকান্দার রাজা। লকি জঙ্গিকে সাথে নিয়ে একাই লড়ে যান তিনি। তবে এরপর ২৯৬ রানের মাথায় জঙ্গি ফিরে গেলেও ফিরে তাকাতে হয়নি জিম্বাবুয়েকে। এরপরই ৫ উইকেটের জয় নিয়ে ফেরেন তারা। সিকান্দার রাজা অপরাজিত থাকেন ১৩৫ রানে।
এর আগে, টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেন তামিম-লিটন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টাইগারদের রান পাহাড়ের ভিত গড়ে ওপেনিং। তামিমের ইতিহাস গড়ার দিনে শতরানের ওপেনিং জুটি লিটনের সাথে। ওপেনিংয়ে জুটি থেকে আসে ১১৯ রান।
৫৪তম হাফসেঞ্চুরি গড়েন তামিম। ৫৭ রানেই পৌঁছে যান প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ৮ হাজার রানের মাইলফলকে। তবে বেশিদূর যেতে পারেনি টাইগার ক্যাপ্টেনের ইনিংস। ৬২ রানে তার বিদায়ে ১১৯ রানের ওপেনিং জুটি ভাঙে টাইগারদের।
দ্বিতীয় উইকেটে ৫২ রানের জুটি গড়েন লিটন দাস ও তিন বছর পর দলে ফেরা এনামুল হক বিজয়। ৭ম ফিফটি তুলে নিয়ে আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠেন লিটন। তবে ভাগ্য সহায় হয়নি ডানহাতি ব্যাটারের। ৮১ রানে পেশিতে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয় লিটনকে।
দুই ওপেনারের দেখানো পথেই হাঁটেন ব্যাটিং লাইনআপের পরের দুই ব্যাটসম্যান। মুশফিকের সঙ্গে বিজয় গড়েন ৯৬ রানের জুটি। ৭ বছর ৮ মাস পর বিজয় তুলে নেন চতুর্থ হাফসেঞ্চুরি। তবে লিটনের মতো বিজয়ও পুড়েন সেঞ্চুরির আক্ষেপে। ৬২ বলে ৭৩ রানে বিজয় আউট নিয়াচির বলে।
হাতে উইকেট থাকলেও শেষদিকে বিগ শটের অভাবে বড়সড় সংগ্রহ গড়তে পারেনি বাংলাদেশ। মুশফিকের ৪২তম ফিফটির সুবাদে নির্ধারিত পঞ্চাশ ওভার শেষে ৩০৩ রান তুলতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ।