তীরে এসে তরী ডোবা বুঝি একেই বলে। ভুবনেশ্বরে পুরো টুর্নামেন্ট দারুণ খেলা বাংলাদেশের যুবারা অবশেষে অসহায় আত্মসমর্পণ করলো ফাইনালের অতিরিক্ত সময়ে এসে।
সাফ অনূর্ধ্ব ২০ ফুটবলের অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন গুড়িয়ে গেলো ফাইনালের অতিরিক্তি সময়ে।
ভুবনেশ্বরে ফাইনালে অতিরিক্ত সময়ের লড়াইয়ে স্বাগতিক ভারতের কাছে ৫-২ গোলে হারল লাল সবুজের যুবারা। নির্ধারিত সময়ে খেলা ২-২ গোলে ড্র ছিলো। কিন্তু ভারতীয় ফুরোয়ার্ড গুরকিরাত সিংয়ের হ্যাটট্রিকসহ চার গোলে রানার্সআপ ট্রফি নিয়েই খুশি থাকতে হলো বাংলাদেশকে।
অথচ লাল সবুজের এই যুবারা ম্যাচের প্রথম মিনিট থেকে লড়াই করেছে সমানে সমান। কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে প্রথম মিনিটে গুরকিরাত সিংয়ের পেনাল্টি থেকে গোল হজম করে পিছিয়ে পড়া।
কিন্তু গ্রুপ পর্বে এই ভারতকেই ২-১ গোলে হারানোর অভিজ্ঞতা নিয়ে মাঠে নামা বাংলাদেশকে কি আর দমিয়ে রাখা যায়? ভগ্ন মনোবল নয় বরং আত্মবিশ্বাস নিয়েই পুরো প্রথমার্ধ প্রতিপক্ষের সীমানায় একের পর এক আক্রমণ শানায় রাজন, পিয়াশরা। ফলও এলো ঠিক বিরতির আগে।
রাইট উইং ফুড়েঁ, ভারতের বক্সে ঢুকে পড়া রফিকুলের পাস থেকে বাংলাদেশকে সমতায় ফেরালেন রাজন হাওলাদার। উৎসবে মাতোয়ারা লাল সবুজ শিবির। সেই উদ্যম অব্যাহত ছিলো দ্বিতীয়ার্ধেও। বিরতি থেকে ফেরার মিনিট খানেক পর ভারতীয় ডিফেন্সের ভুলে এবার বাংলাদেশকে লিড এনে দেন ডিফেন্ডার শাহীন মিয়া।
কিন্তু ঘরের মাঠে সহজেই হাল ছাড়তে চায়নি ভারত। ম্যাচে ফিরতে বাড়ে স্বাগতিকদের চাপ। গুরকিরাতের দ্বিতীয় গোলে ২-২ এ সমতায় ফিরে বাংলাদেশ। সাথে স্বাগতিক শিবিরে ফিরে স্বস্তি।
২-২এর ওই সমতা নিয়েই শেষ হয় নির্ধারিত সময়ের খেলা। অতিরিক্ত সময়ে আর স্নায়ুর চাপ সামলাতে পারেনি পল স্মলির দল। সেই সুযোগে বাংলাদেশের জালে গোল উৎসব ভারতীয়দের। দর্শনীয় আরো দুই গোল করে হ্যাটট্রিক পূরণের সাথে ফাইনালে একাই হালি গোল করেন গুরকিরাত সিং। অপর গোলটি করেন হিমাঙসু চাংরা।
বিপরীতে ক্লান্ত বাংলাদেশ ঢুকে পড়ে রক্ষণাত্মক খোলসে। শেষ পর্যন্ত রানার্সআপ হয়েই শেষ করতে হলো টুর্নামেন্ট। ভারতের শিরোপা আনন্দে বাংলাদেশের উৎসব ম্লান হয়েছে ঠিকই। কিন্তু পিয়াস, মিরাজুল, রফিকুলদের নিয়ে নিয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতেই পারে লাল সবুজের ফুটবল।