রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ইউরোপ যদি যুদ্ধ চায়, তবে রাশিয়া যুদ্ধ করতে প্রস্তুত।
মঙ্গলবার (২রা ডিসেম্বর) মস্কোতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই কড়া বার্তা দেন। একই সঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, ইউক্রেন সংঘাত নিরসনে একটি সম্ভাব্য শান্তি চুক্তি বানচাল করার চেষ্টা করছে ইউরোপীয় নেতারা।
পুতিন এমন এক সময়ে এই মন্তব্য করলেন, যখন প্রায় চার বছর ধরে চলা রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অবসান ঘটাতে উচ্চপর্যায়ের আলোচনার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূতরা মস্কোতে অবস্থান করছেন।
কয়েক দিন ধরে চলা টানা কূটনৈতিক তৎপরতার অংশ হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার এবং মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ এখন মস্কোতে। তাদের সঙ্গে বৈঠকের ঠিক আগমুহূর্তে পুতিন ইউরোপের বিরুদ্ধে এই ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ইউরোপের সঙ্গে আগ বাড়িয়ে যুদ্ধে জড়ানোর কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই। কিন্তু তারা যদি যুদ্ধ চায় এবং তা শুরু করে, তাহলে আমরাও জবাব দিতে প্রস্তুত। তাদের কোনো শান্তির এজেন্ডা নেই, তারা মূলত যুদ্ধের পক্ষেই অবস্থান নিয়েছে।
পুতিন দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার যে প্রচেষ্টা চলছে, তাতে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ইউরোপীয় নেতারা। তিনি বলেন, যুদ্ধ শেষ করতে ট্রাম্প প্রশাসন যে সর্বশেষ প্রস্তাব এনেছিল, ইউরোপ তাতে এমন কিছু পরিবর্তন এনেছে যার মূল লক্ষ্য পুরো শান্তি প্রক্রিয়াকে আটকে দেওয়া এবং রাশিয়ার কাছে অগ্রহণযোগ্য দাবি পেশ করা।
জানা গেছে, সংঘাতের অবসান ঘটাতে ওয়াশিংটন প্রথমে ২৮ দফার একটি খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করেছিল। কিন্তু কিয়েভ ও ইউরোপীয় দেশগুলো অভিযোগ তোলে যে, ওই প্রস্তাবে রাশিয়ার কঠোর দাবিগুলোর প্রতি অতিমাত্রায় সহানুভূতি দেখানো হয়েছে। তাদের সমালোচনার মুখে প্রস্তাবটি সংশোধন করা হয়। তবে পুতিনের মতে, সংশোধিত এই রূপরেখা মূলত শান্তি প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করার একটি কৌশল।
অন্যদিকে ইউরোপীয় দেশগুলোর আশঙ্কা, ট্রাম্পের নেতৃত্বে এই শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে কিয়েভকে রাশিয়ার দাবির কাছে নতি স্বীকার করতে হতে পারে, বিশেষ করে ভূখণ্ড ছাড় দেওয়ার বিষয়ে। রাশিয়ার ভবিষ্যৎ আগ্রাসনের আশঙ্কায় ইউরোপ বারবার সতর্ক করেছে যে, ইউক্রেনের ওপর কোনো অন্যায্য শান্তিচুক্তি চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়। বর্তমানে ট্রাম্পের দূতরা মস্কো ও কিয়েভ উভয় পক্ষের সম্মতি নিয়ে এই পরিকল্পনাটি চূড়ান্ত করার জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
তথ্যসূত্র: রয়টার্স।
ডিবিসি/এএমটি