যুক্তরাজ্যের লন্ডনে রাস্তার ড্রেনে কাপের অবশিষ্ট কফি ঢেলে দেওয়ায় এক নারীকে বড় অঙ্কের জরিমানার মুখে পড়তে হয়েছে। গত ১০ই অক্টোবর লন্ডনের পশ্চিমাঞ্চলের রিচমন্ড এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। বুরজু ইয়েসিলিউর্ত নামে ওই নারীকে ব্রিটিশ পরিবেশ সুরক্ষা আইন লঙ্ঘনের দায়ে ১৫০ পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ২৪ হাজার টাকারও বেশি) জরিমানা করা হয়।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, কিউ এলাকার বাসিন্দা বুরজু ইয়েসিলিউর্ত সকালে কাজে যাচ্ছিলেন। বাসে ওঠার আগে তিনি তার পুনর্ব্যবহারযোগ্য কাপে থাকা সামান্য কফি রাস্তার পাশের ড্রেনে ঢেলে দেন। তিনি ভেবেছিলেন, বাসে উঠতে গেলে ওই কফিটুকু তার শরীরে ছিটকে পড়তে পারে।
কিন্তু এর কিছুক্ষণ পরই তিনজন আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা ওই বাসটিকে তাড়া করে এসে থামান। তারা ইয়েসিলিউর্তকে ১৯৯০ সালের ব্রিটিশ পরিবেশ সুরক্ষা আইনের ৩৩ নম্বর ধারা লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত করেন এবং জরিমানার নোটিশ ধরিয়ে দেন।
এই ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করে ইয়েসিলিউর্ত বলেন, আমি ভাবলাম দায়িত্বশীল কাজ করছি। কিন্তু হঠাৎ তিন অফিসার এসে আমাকে ঘিরে ধরলেন এটা সত্যিই আমার জন্য ধাক্কার মতো ছিল।
কর্মকর্তারা তাকে জানান, যেকোনো ধরনের তরল বর্জ্য ড্রেনে ফেলা আইনত নিষিদ্ধ এবং এটি পরিবেশদূষণ হিসেবে গণ্য হয়। কফির অবশিষ্ট অংশটুকু তার নিকটস্থ ডাস্টবিনে ফেলা উচিত ছিল।
ইয়েসিলিউর্ত অভিযোগ করেন, ঘটনাস্থলের কোথাও এমন কাজের বিরুদ্ধে কোনো সতর্কবার্তা বা সাইনবোর্ড ছিল না। তিনি বলেন, আমি তাদের জিজ্ঞেস করলাম, কোনো সাইন আছে কি? তারা কিছুই বলল না।
জরিমানার নোটিশে বলা হয়েছে, ধার্যকৃত ১৫০ পাউন্ড ১৪ দিনের মধ্যে পরিশোধ করলে তা ১০০ পাউন্ডে নামিয়ে আনা হবে। তবে ইয়েসিলিউর্ত এখনো সেই অর্থ পরিশোধ করেননি। এর পরিবর্তে, তিনি এই জরিমানার বিরুদ্ধে রিচমন্ড কাউন্সিলে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানিয়েছেন। তার দাবি, আইনটি যদি এত কড়াকড়ি হয়, তবে সড়ক ও বাসস্টপে স্পষ্টভাবে সতর্কতামূলক সাইন থাকা উচিত।
এদিকে, রিচমন্ড কাউন্সিল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইয়েসিলিউর্তকে বৈধভাবেই জরিমানা করা হয়েছে এবং কর্মকর্তারা পেশাদার ও নিরপেক্ষভাবেই কাজ করেছেন। কাউন্সিল বলেছে, আমরা রিচমন্ডের জলপথ ও সড়ক পরিষ্কার রাখতে বদ্ধপরিকর। প্রয়োজন হলে আইন প্রয়োগ করা হয়। কেউ যদি মনে করেন তার ওপর আরোপ করা জরিমানাটি অন্যায্য, তবে তিনি পর্যালোচনার আবেদন করতে পারেন।
উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্যের পরিবেশ সুরক্ষা আইনে বলা আছে, এমন কোনো বর্জ্য বা তরল ফেলা অপরাধ যা মাটি বা জল দূষণের কারণ হতে পারে; এমনকি রাস্তার পাশের ড্রেনে তরল ঢালাও এর অন্তর্ভুক্ত।
ডিবিসি/এএমটি