জাতীয় পাট দিবস (৬ মার্চ) এর প্রচারণায় যে পাতার ছবি ব্যবহার করা হয়েছে, তা নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। ছবিটি গাঁজা পাতার সদৃশ বলছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অনেক ব্যবহারকারী। তবে এমন দাবি অস্বীকার করে মন্ত্রণালয় বলছে, ভাইরাল হওয়া ছবিটি পাটের নতুন জাত মেস্তা পাতার।
‘সোনালি আঁশের সোনার দেশ/পাট পণ্যের বাংলাদেশ’ এ স্লোগানে গত ৬ মার্চ জাতীয় পাট দিবস পালন করা হয়। ওই দিন রাজধানীর বিজয় সরণী মোড়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সৌজন্যে ফেস্টুন চোখে পড়ে। তাতে পাটজাত পণ্যের সঙ্গে রয়েছে সবুজ পাতার ছবি। সেখানে খাঁজ কাটা সবুজ পাতা দেখে পথচারীদের অনেকেই এটা পাট পাতা কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন।
বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর ছবিটি ভাইরাল হয়ে যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অনেক ব্যবহারকারী গাঁজা পাতা বলে দাবি করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও প্লান্ট টেক্সনমিস্ট ড. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন সংবাদমাধ্যমকে জানান, এটা পাট পাতা নয়। এটা ভিন্ন জাতীয় কোনো উদ্ভিদের পাতা। পাটের পাতা সরল ও একক; আঙ্গুলের মতো এমন ছেঁড়া ছেঁড়া নয়। এ দুই ধরনের পাটের পাতার কোনোটাই এ ছবিতে ব্যবহার করা হয়নি।
তিনি আরও জানান, দেশে প্রধানত দুটি প্রজাতির পাটের চাষ হয়। এর মধ্যে একটির পাতা মিষ্টি, আরেকটার পাতা তিতা। সাধারণ মানুষের কাছে দেশি ও তোষা এই দুই ধরনের পাট পরিচিত।
পাট নিয়ে নানা গবেষণা চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, পাট ছাড়া অন্যান্য প্রজাতির উদ্ভিদ থেকেও তন্তু পাওয়া যায়। তবে তা পাট নয়।
পাট দিবসের মতো অনুষ্ঠানে এমন ছবি ব্যবহার মানুষকে ‘বিভ্রান্ত করবে’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'পাট দেশের সম্পদ, সোনালি আঁশ দেশের ঐতিহ্য, গর্বের পণ্য। সবার কাছে এটা পরিচিত। মানুষের চেনাজানা সোনালি আঁশ নিয়ে এ ধরনের বিভ্রান্তিকর পোস্টার সরিয়ে নেওয়া ভালো। মানুষ পাটের পরিবর্তে অন্য কিছু চাষে উদ্বুদ্ধ হবে।'
'আমরা বরাবরই বলি, উদ্ভিদের নাম ও পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার বিষয়ে প্লান্ট টেক্সনমিস্টদের পরামর্শ নেওয়া উচিত। যে কোনো বিষয়ে সংশ্লিষ্ট এক্সপার্ট পার্সনদের সঙ্গে আলোচনা করলে বাস্তবসম্মত কাজ হয়, এ ধরনের ভুল এড়ানো যায়, বলেন এই শিক্ষক।'
বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা সৈকত চন্দ্র হালদার জানান, এই ছবিটি পাটের নতুন জাত মেস্তা পাতার। ওই পাটের পাতাটিই এমন।