বহু বছর ধরে মানুষের সেবা করে আসছে গাধা। এই প্রাণীটিকে আজ ভালোবাসার দিন, সম্মান জানানোর দিন। আজকের দিনে কেউ যদি আপনাকে গাধা বলে, তবে রাগ করার দরকার নেই। কেননা আজকের দিনটা গাধাদের।
শুধু যে গাধারাই গাধা; বিষয়টা এরকম নয়। আমাদের চারপাশের অনেক মানুষকেও আমরা গাধার চোখে দেখি।আমাদের শিক্ষকগণ তো গাধা হিসেবে পেয়ে পরে মানুষ করেছেন। গাধা থেকে যারা মানুষ হয়েছেন, তাদের জন্য দিবসটি নয়। যে প্রাণীটি জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত গাধা, দিবসটি সেই প্রাণীদের জন্য।
এখন কথা হলো- কীভাবে এল এই দিবসটি? আর কেনই বা প্রচলন করা হলো এই দিনের? যতদূর জানা যায়, গাধা দিবসের প্রচলন করেছিলেন আর্ক রাজিক। তিনি একজন বিজ্ঞানী এবং মরুভূমির প্রাণী নিয়ে কাজ করেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন গাধারা মানুষের জন্য যে পরিমাণ কাজ করে, সেই পরিমাণ স্বীকৃতি পাচ্ছে না। এজন্য তিনি একটি ফেসবুক গ্রুপ তৈরি করেন। তারপর সেখানে গাধা বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য প্রচার করতে শুরু করেন।
আর্ক রাজিকের প্রচেষ্টায় ২০১৮ সালে প্রথম বিশ্ব গাধা দিবস উদযাপন করা হয়। তখন থেকে প্রতি বছর ৮ মে গাধা দিবস হিসেবে উদযাপিত হচ্ছে। দিবসটি উদযাপনের উদ্দেশ্য হলো গাধাকে নিয়ে তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া এবং তারা কীভাবে মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলছে, তা তুলে ধরা।
সারা বিশ্বে এই প্রাণীটিকে বোঝা টানতে ব্যবহার করা হয়। তারা প্রতিকূল জলবায়ু ও ভূখণ্ডেও টিকে আছে। গাধারা তাদের ধৈর্য ও অধ্যবসায়ের জন্য আমাদের সবার কাছে বেশ পরিচিত। গাধা কাজ থেকে পিছপা হয় না। মাইলের পর মাইল বোঝা টানতে সক্ষম। গাধা অন্যান্য প্রাণীর তুলনায় বেশি সময় পরিশ্রম করতে পারে।
আমাদের জীবনে গাধা প্রাচীনকাল থেকে যে প্রভাব রেখেছে ও রাখছে, তা অকল্পনীয়। বোঝা টানা থেকে শুরু করে গাধার চামড়ায় থাকা আঠা দিয়ে ওষুধ তৈরি- নানাভাবে প্রাণীটি মানুষের কেবল উপকারই করে গিয়েছে। গাধার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি এখন চীনে। ৩য় অবস্থানে আছে পাকিস্তান। সেখানে গাধার চাহিদা অনেক বেশি হলেও খুব দ্রুত এই প্রাণিটির রয়েছে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা।
আধুনিক গাধার দু’টি পূর্বপুরুষ আছে। উভয়ই আফ্রিকান বন্য গাধার উপ-প্রজাতি এবং এগুলো হলো সোমালি বন্য গাধা ও নুবিয়ান বন্য গাধা।
জানা যায়, গাধা কয়েক শতাব্দী ধরে মানুষের জন্য কাজ করছে। মানুষের প্রয়োজনে ধারাবাহিকভাবে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণিটি। তারা দীর্ঘপথ ভ্রমণ করতে পারে। তারা শক্তিশালী এবং কঠোর পরিস্থিতিতেও নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে। এই প্রাণিটি কাজ থেকে পিছপা হয় না। তারা মাইলের পর মাইল কার্গো টানতে সক্ষম। আর সেখান থেকে গাধা টানার গাড়িগুলোর ধারণা আসে। তারা অন্যান্য প্রাণীর তুলনায় বেশি সময় পরিশ্রম করতে পারে। তাদের চলার গতি ঘণ্টায় ৩১ মাইল পর্যন্ত হতে পারে। গাধার গড় আয়ু ৫০ থেকে ৫৪ বছরের মধ্যে হয়।
বিশ্ব জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবের কারণে অনেক প্রাণি বিলুপ্ত হচ্ছে। গাধাদেরও বিভিন্ন প্রজাতি বিলুপ্ত হয়েছে। যারা টিকে আছে, তাদেরও সংখ্যা নগন্য। সকল প্রাণির বসবাসের জন্য বিশ্বকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।
ডিবিসি/আরপিকে