বাংলাদেশ, জেলার সংবাদ

রাজশাহীতে ডিবি পরিচয়ে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ দাবি, ৪ পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার

রাজশাহী প্রতিনিধি

ডিবিসি নিউজ

মঙ্গলবার ৭ই মে ২০২৪ ০৩:৫০:৪৮ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় সোহান নামে এক কিশোরকে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তের স্বার্থে রবিবার (৫ মে) সন্ধ্যার পর তাদের উপজেলার প্রেমতলী পুলিশ তদন্তকেন্দ্র থেকে রাজশাহী পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করা হয়।

প্রত্যাহার হওয়া চার পুলিশ সদস্য হলেন, প্রেমতলী পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রেজাউল করিম, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. আনোয়ারুল ইসলাম, কনস্টেবল মো. রেজাউল করিম ও মিলন হোসেন।

 

এর আগে শনিবার (৪ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার গোগ্রাম গ্রাম থেকে সোহান নামে ওই কিশোরকে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর প্রেমতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পাশে পদ্মা নদীর পাড়ে গিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। 

 

এ ঘটনার পর গোদাগাড়ীর প্রেমতলী তদন্ত কেন্দ্রের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আনোয়ার হোসেনকে পেয়ে স্থানীয়রা অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ সময় উত্তেজিত জনতা পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে। পরে গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মতিন ও গোদাগাড়ী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সোহেল রানা গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। 

 

এসময় উত্তেজিত জনতা পুলিশের কাছে সোহানকে ফেরত চায়। তখন সোহানের মোবাইল ফোনে অপহরণকারীদের সঙ্গে কথা বলেন ওসি আব্দুল মতিন। এরপর রাত সাড়ে ১১টার দিকে তারা সোহানকে ছেড়ে দেয়। সোহানের বাবা মো. মুর্ত্তজা একজন কাপড় ব্যবসায়ী।

 

এই ঘটনার পর সোহানের দাবি, ‘পুলিশ পরিচয় দিলেও ওই সময় তাদের পরনে পুলিশের পোশাক ছিল না। তাদের একজনের হাতে থাকা হাতকড়া তাকে পরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পরে তারা আমাকে বলেন, তোর বাবাকে কল কর। দুই লাখ টাকা নিয়ে আনতে বল। টাকা না পেলে মাদক মামলায় চালান করব। এ সময় আমার মোবাইলে অন্য নম্বর থেকে কল আসছিল। কিন্তু তারা রিসিভ করতে দেননি। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে বসন্তপুর-খেতুরধামের রাস্তায় ফাঁকা জায়গায় নামিয়ে দিয়ে যান। সেখান থেকে আমি গোগ্রাম বাজারে চলে আসি।’

 

এদিকে ভুক্তভোগীকে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার খবরটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে তার পরিবার তাকে খুঁজতে থাকেন। থানায় ফোন করা হয়। এ সময় এএসআই আনোয়ারুলকে সাদা পোশাকে গোগ্রাম বাজারে দেখতে পান স্থানীয়রা। 

 

স্থানীয় লোকজন তার কাছে ভুক্তভোগীর বিষয়ে জানতে চান। একপর্যায়ে স্থানীয় ব্যক্তিরা তাকে অবরুদ্ধ করেন। পরে খবর পেয়ে প্রেমতলী তদন্তকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসমান গণি অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। সেখানে গিয়েই লোকজনকে লাঠিপেটা করেন তিনি। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। 

 

এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে স্থানীয়রা পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। পরে গোদাগাড়ী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মতিন ও গোদাগাড়ী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সোহেল রানা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে এএসআই আনোয়ারুলকে সেখান থেকে নিয়ে যান।

যদিও ওই কিশোরকে তুলে নিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন, এএসআই আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, জড়িত না হলেও ঘটনার সঙ্গে তাকে ফাঁসানো হয়েছে।

 

তবে রাজশাহী পুলিশ সুপার (এসপি) মো. সাইফুর রহমান জানিয়েছেন, এই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্তের স্বার্থে প্রাথমিকভাবে চারজনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

 

তদন্ত সাপেক্ষে অভিযোগের সত্যতা পেলে এই ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

 

ডিবিসি/ এসএইচ 

আরও পড়ুন