আল জাজিরার বিতর্কিত প্রতিবেদনে ঘটনা বর্ণনাকারী চরিত্র সামি একজন প্রাক্তন ক্যাডেট। মাদকাসক্তির কারণে ক্যাডেট কলেজ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। তার আসল নাম জুলকার নায়েন সায়ের খান।
তার বিরুদ্ধে হাঙ্গেরিতে জঙ্গিবাদে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। বাংলাদেশেই একাধিকবার আটক হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে। চুরি ও প্রতারণার ঘটনায় বাংলাদেশের সব সেনানিবাসে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয় সামিকে।
আল জাজিরা আসল নাম প্রকাশ করেনি। কিন্তু ক্যামেরার সামনে ঠিকই চেহারা দেখিয়েছেন। প্রতিবেদন প্রকাশের পরই পরিচিত স্বজন, বন্ধু, ক্লাসমেটরা একের পর এক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তাতেই উঠে এসেছে সামি নামের এই ব্যক্তি আসলে কে?
পরিচিতজনদের ফেসবুক পোস্ট আরো জানিয়ে দিচ্ছে, শশুরের টাকায় হাঙ্গেরিতে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা দিয়েছিলো সামি। সেই কারি হাউজ ছিলো হামাস আর আইএসএর স্লিপার সেল সদস্যদের নিয়মিত সাক্ষাতের স্থান।
তার বন্ধুদের সন্দেহ, রেস্তোরা ব্যবসার আড়ালে, অর্থ পাচারের সঙ্গেও যুক্ত আলজাজিরার সামি। এতকিছুর কেন্দ্রীয় চরিত্র সামি নাম পাল্টেছে বহুবার। কখনো তানভীর সাদাত। কখনো সায়ের জুলকারনাইন। তবে পাসপোর্ট বলছে তার নাম জুলকার নাইন সায়ের খান।
১৯৮৬'র অক্টোবরে জন্ম নেয়া সায়ের খান ক্লাস এইটে থাকাকালে ক্যাডেট কলেজ থেকে বহিস্কৃত হয়। কুমিল্লা ইস্পাহানি কলেজে থাকাকালিন নেশায় আসক্ত হয়। মেয়েদের উত্যক্ত করার অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে। তখন থেকে স্বজন আর বন্ধুরা এড়িয়ে চলা শুরু করে তাকে।
১৭ বছর বয়সে, ২০০০ সালে, ইসিবিতে কর্মরত মেজর ওয়াদুদের ট্র্যুকসুট চুরি করে ধরা পড়ে সায়ের খান। চট্টগ্রাম নিউমার্কেটের অঙ্গনা জুয়েলার্সেও চোরাই হাতির দাঁত বিক্রি করতে গিয়ে ধরা পড়ে । সেনা কর্মকর্তা না হয়েও সেকেন্ড লেফটেন্যান্টের ইউনিফর্ম পরতো সে। তবে সিএমএইচে মিলিটারি পুলিশের কাছে ধরা পড়ে সে।
নিজেকে রেব কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে দুই প্রতিষ্ঠান থেকে মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ কেনে জুলকার নাইন সায়ের খান। ভুয়া চেকের অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১।
এতসব ঘটনায় সব সেনানিবাসে জুলকার নাইন সায়ের খানকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়।
অনিয়ন্ত্রিত জীবন আর উচ্ছৃঙ্খলতায় অতিষ্ট হয়ে, পুত্রকে ত্যাজ্য করেন সেনা কর্মকর্তা পিতা আব্দুল বাসেত। পরে ২০০৬ সালের ২৩শে জুলাই সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি।