বিবিধ, লাইফস্টাইল

আজ চকলেট কেক দিবস!

Faruque

ডিবিসি নিউজ

বৃহঃস্পতিবার ২৭শে জানুয়ারী ২০২২ ০৯:৪০:৪২ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী কিংবা যেকোনো সেলিব্রেশন কেক ছাড়া যেন অসম্পূর্ণ। তবে সেটা যদি হয় চকলেট কেক তাহলে তো কথাই নেই। নিজের ভাগেরটা উদ্ধার করতে কিছুটা যুদ্ধই করতে হবে আপনাকে। ছোট বড় সবাই কমবেশি চকলেট কেক খেতে পছন্দ করেন। চকলেট আর কেকের মেলবন্ধনে আপনার রসনার স্বাদ আরো খানিকটা বাড়িয়ে দেবে।

আজ কিন্তু চকলেট কেক দিবস। চকলেট কেক যারা পছন্দ করেন তাদের জন্য আজ খুশির দিন। আপনার প্রিয় কেকের দিবস উপলক্ষ্যে ডায়েট ভেঙে ইচ্ছামতো কেক খেতে পারেন আজ। এই দিবসের ইতিহাস জানা আছে আপনার? 

চকলেট কেকের মূল উপকরণ চকলেটের উদ্ভাবন প্রায় তিনশ বছর আগে। ১৭৬৪ খ্রিষ্টাব্দে যুক্তরাষ্ট্রে ড. জেমস বেকার নামের এক ব্যক্তি কোকো বিন গুঁড়া করে চকলেট বানানোর উপায় উদ্ভাবন করেন। তিনি চিকিৎসকও ছিলেন। বেকারের চকলেট পরে বিশ্বজুড়ে সুখ্যাতি অর্জন করে। ১৮৭৯ খ্রিষ্টাব্দে আরও নরম ও উন্নত চকলেট তৈরির কৌশল বের করেন রুডলফ লিন্ট। সুইজারল্যান্ডের বাসিন্দা লিন্ট চকলেটের মিশ্রণের জন্য বিশেষ যন্ত্র তৈরি করেন। পরে লিন্ট চকলেট কারখানা গড়ে তোলেন। সেখানে উন্নতমানের চকলেট তৈরি হতো।

সুস্বাদু চকলেট তৈরির পর কেকের সঙ্গে মেশানোর চিন্তা মাথায় আসে। যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের পিটর্সবার্গের দ্য ডাফ কোম্পানি প্রথম চকলেট কেকের সঙ্গে পরিচিত করে মানুষকে। তৈরি হয় ডেভিলের চকলেট কেক। দিন দিন আরও সুস্বাদু ও উন্নত চকলেট কেক তৈরির নতুন নতুন কৌশল বের হয়। যুক্তরাষ্ট্রের জেনারেল মিলস কোম্পানির বেটিহ ক্রকা শুকনো ধরনের চকলেট কেক তৈরি করে। তাদের তৈরি কেক যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়। ১৯৯০ সালে তরল চকলেটের তৈরি কেক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

যুক্তরাষ্ট্রের ডেলাওয়ার অঙ্গরাজ্যের সাপ্তাহিক পত্রিকা ডোভার পোস্ট জানায়, জনপ্রিয় ফিলাডেলফিয়া কুকবুকের লেখক এলিজা লেসলি ১৮৪৭ খ্রিষ্টাব্দে দ্য লেডিস রেসিপ্ট বুকে চকলেট কেকের রেসিপি জানান। তবে আজকের চকলেট কেকের তুলনায় সেটি ছিল নস্যি। সেটিকে বলা যেতে পারে চকলেটের টুকরা অংশ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সারাহ টাইসন রোরার, মারিয়া পারলোয়ারের রেসিপিতে বানানো হয় সুস্বাদু, নরম চকলেট কেক। তারা কুকবুকের লেখক।

বাংলাদেশেও চকলেট কেক বেশ জনপ্রিয়। নতুন ধরনের চকলেট কেক বানানো হয় এখন। এগুলোর চাহিদাও অনেক। আগেকার চকলেট ও ক্রিম লেয়ারের কেকের বদলে এখন কোটেট, ড্রাই, প্লেন, ব্ল্যাক ফরেস্টসহ হরেক রকম কেক রয়েছে। বিভিন্ন চকলেট এখন বাংলাদেশে পাওয়া যায়। এগুলো দিয়েও নতুন ধরনের চকলেট কেক বানানো হয়। আবার চকলেট কেকের মধ্যেও আছে স্বাদ আর গন্ধের তারতম্য। 

আমাদের দেশে ঘটা করে এই দিবস পালন করা হয় না। তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই দিবস উপলক্ষ্যে নানান ধরনের আয়োজন করা হয়। আসলে যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপের তুলনায় এশিয়ায় চকলেট কেক দিবস উদ্‌যাপনের চল কম। সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার কারণেই এমনটা ঘটে। বাংলাদেশেও চকলেট কেক ডে সেভাবে উদ্‌যাপিত হয় না। 

যুক্তরাষ্ট্রে চকলেট কেক দিবস বেশি জমজমাট হয়। সেখানে চকলেট কেক দিবস উদ্‌যাপনে তারা একটাই কাজ করেন, তা হলো- খাওয়াদাওয়া আর মজা করা। চকলেট কেক দিবসে বন্ধু ও স্বজনের সঙ্গে কেক খাওয়া হয়। অনেকেই যান নিজের পছন্দের কেকের দোকানে। ভালো কেক তৈরির জন্য তাদের ধন্যবাদ জানান। চাইলে কেকের দোকানে নিজের কেকের রেসিপিও দেন অনেকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের তৈরি চকলেট কেকের ছবি, চকলেট কেকের রেসিপি, চকলেট কেক খাওয়ার ছবি পোস্ট করা হয়। শুধু ছবি নয়, পোস্ট করা হয় সুস্বাদু চকলেট কেকের ভিডিও।

লেমন কেক, অরেঞ্জ কেক নতুন নতুন যত কেকই আসুক না কেন, চকলেট কেককে বলা যায় কেকের রাজা। যুক্তরাষ্ট্রের চকলেট কেকের পাশাপাশি জার্মান চকলেট কেকও যথেষ্ট জনপ্রিয়। এমনকি চিলির চকলেট কেকও যথেষ্ট সুস্বাদু। চকলেট কেক দিবসে ইউটিউব ঘেঁটে বানানো যেতে পারে নতুন নতুন কেক। বিংশ শতাব্দীর শেষে ও একবিংশ শতাব্দীর শুরু থেকে চকলেট কেক দিবস সংস্কৃতির একটি অংশ হয়ে ওঠে। 

আরও পড়ুন