পাবনা জেনারেল হাসপাতালে করোনা রোগী চিকিৎসায় আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই চার শয্যার আইসিইউ ইউনিট চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য, জেলা আওয়ামী লীগ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স।
মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে, জেনারেল হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবার চিত্র পরিদর্শন শেষে হাসপাতালের পরিচালক, চিকিৎসক ও কর্মচারীদের সাথে জরুরি বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান। এসময় পাবনা মেডিকেল কলেজে আরটিপিসিআর ল্যাব স্থাপন ও জেনারেল হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থার কাজ দ্রুত শেষ করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনাও দেন তিনি।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ আইয়ুব হোসেন জানান, করোনা চিকিৎসায় সারা দেশে বড় হাসপাতালগুলোতে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। পাবনা হাসপাতালেও সে কাজ চলমান। মাঝখানে কাজের কিছুটা ধীরগতি থাকলেও সম্প্রতি কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। আশা করছি আগামী এক মাসের মধ্যেই এই ইউনিট চালু করা সম্ভব হবে।
তিনি আরো জানান, করোনা রোগী বৃদ্ধি পাওয়ায় জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে কোভিড ইউনিট পুনরায় চালু করা হয়েছে। লোকবল সংকট ও কিছু কারিগরি সীমাবদ্ধতায় হাসপাতালে চার শয্যার আইসিইউ চালু করা সম্ভব হয়নি। সংসদ সদস্য মহোদয়ের সাথে বৈঠকে আমরা আপৎকালীন কিছু সমাধান বের করেছি। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই চার শয্যার আইসিইউ চালুর সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।
এদিকে, বৈঠক শেষে পাবনা মেডিকেল কলেজে চলমান আরটিপিসিআর ল্যাব নির্মাণ কাজের অগ্রগতির বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দ্রুত কাজ শেষ করতে গণপূর্ত বিভাগকে তাগাদা দেন গোলাম ফারুক প্রিন্স।
এসময় গণপূর্ত বিভাগ পাবনার নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল আজিম জানান, পিসিআর ল্যাবের অবকাঠামো নির্মাণের প্রায় ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ শেষ করে আগামী এক মাসের মধ্যে স্বাস্থ্য বিভাগের নিকট হস্তান্তর করা হবে।
বৈঠক শেষে গোলাম ফারুক প্রিন্স বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগের লোকবল সংকট ও কিছু জটিলতায় বার বার পিসিআর ল্যাব স্থাপনের কাজ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। আমি ঢাকায় স্বাস্থ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে দেখা করে কথা বলেছি। তারা অবকাঠামো নির্মান শেষ হলেই কারিগরি বিষয়ে তারা সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তারা আন্তরিক হলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে ল্যাব স্থাপন সম্ভব হবে।
হাসপাতালের আইসিইউ এর বিষয়ে তিনি বলেন, প্রশিক্ষিত চিকিৎসক ও নার্স সংকট আইসিইউ চালুর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা। সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা চালু না হলেও বিকল্প পদ্ধতিতে অক্সিজেন সরবরাহের মাধ্যমে এ ইউনিট চালুর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। সীমিত লোকবলের মধ্যেই প্রশিক্ষণ দিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে চার শয্যার আইসিইউ চালু করবেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ ব্যপারে তাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে।
প্রসঙ্গত, সারা দেশে ২৫০টি পিসিআর ল্যাবে করোনা পরীক্ষা চালু থাকলেও পাবনায় এখনো পিসিআর ল্যাবের কার্যক্রম শুরু হয়নি। লোকবল ও কারিগরি সংকটে উদ্বোধনের প্রায় পাঁচ বছরেও চালু হয়নি জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিট। করোনা আক্রান্ত গুরুতর রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা না থাকায় তাদের ঢাকা কিংবা রাজশাহীতে যেতে হয়।