কুমিল্লায় অটোরিকশা চালক বাবার জমজ দুই ছেলে উত্তীর্ণ হয়েছেন এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায়। একজন সুযোগ পেয়েছেন ময়মনসিংহ, আর অপরজন পেয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে। ছেলেরা ডাক্তার হয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াবে এমন আশা বিল্লাল হোসেনের।
মনোহরগঞ্জ উপজেলার মানোরা গ্রামের বিল্লাল হোসেন ও নাসরিন বেগমের চার সন্তান। ৬ সদস্যের সংসার চলে বিল্লাল হোসেনের অটোরিকশা চালিয়ে উপার্জিত অর্থে। অভাবের কারণে বিল্লাল নিজে পড়ালেখা শেষ করতে পারেননি। কিন্তু স্বপ্ন দেখতেন নিজের অপূর্ণ ইচ্ছা পূরণ করবেন সন্তানদের মাধ্যমে। এবার তার যমজ দুই ছেলে আরিফ হোসেন ও শরীফ হোসেন সুযোগ পেয়েছেন এমবিবিএস পড়ার।
আরিফ সারা দেশে ৮শ' ২২তম হয়ে ময়মনসিংহ এবং শরিফ ১ হাজার ১শ' ৮৬ তম হয়ে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। বাবার অক্লান্ত পরিশ্রম আর মায়ের উৎসাহে তাদের এই সাফল্য বলে জানায় মেধাবী দুই ভাই।
এমবিবিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ আরিফ হোসেন বলেন,'আমরা যেহেতু দরিদ্র ঘরের সন্তান, দরিদ্র ঘর থেকে উঠে এসেছি, তাই দরিদ্র মানুষ যাতে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত না হয় এবং একজন ভালো ডাক্তার হতে পারি।'
এমবিবিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শরীফ হোসেন বলেন,'আমার এই সফলতার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা হচ্ছে আমার মা-বাবার। আমার বাবা একজন অটোরিক্সা চালক। তিনি খুবই কষ্ট করে আমাদের পড়ালেখা শিখিয়েছেন।'
দারিদ্র্যের কারণে পড়ালেখা চালাতে অনেকের সহায়তা নিতে হয়েছে। নাসরিন বেগম আরিফ-শরীফের মা বলেন,'চারটা বাচ্চার লেখাপড়া করাই। ডাক্তারি পরীক্ষায় পাশ করছে এটিই আনন্দের বিষয়। এখন আর আমার দুঃখ মনে আসে না।'
ছেলেরা বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাড়াবে এমন আশা বাবার। আরিফ-শরীফের বাবা বিল্লাল হোসেন জানান,'আমি অত্যন্ত গর্বিত। যত কিছুর বিনিময়ে হোক আমি লেখাপড়া চালিয়ে যাবো। আমি শিক্ষা অনুরাগীদের কাছে আবেদন করেছি। তারা সাড়া দিয়েছেন।'
ভর্তি পরীক্ষার উত্তীর্ণ হলেও পরবর্তী পড়াশোনা চালানো নিয়ে আছে শঙ্কাও।