করোনাকালে যখন গোটা বিশ্বের মানুষ আত্মকেন্দ্রিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে, সে সময় অধিকাংশ তরুণ সেবা পৌঁছে দিচ্ছে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে। রক্তদান থেকে শুরু করে নানা রকম সামাজিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হয়ে কাজ করছে দুস্থ, অসহায় ও মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষের জন্য।
নাসিম আশরাফ, এখনো শিক্ষার্থী। পড়াশুনার পাশাপাশি অন্যের উপকার হবে এমন কাজে সদা তৎপর। বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারিতেও অদম্য সাহস নিয়ে এগিয়ে এসেছেন মানুষের সেবায়। তরুল নাসিম জানান, 'করোনা ছাড়াও তো অন্য অনেক রোগে সমস্যা হতে পারে। তার কারণেই রক্ত দেয়া। যদি আমার কারণে আরেকজনের জীবন বাঁচে।'
নাসিম আশরাফের মতো যারা রক্ত দিয়ে মানুষের জীবন বাঁচিয়ে চলেছেন তাদের অধিকাংশই তরুণ। অনেক তরুণকে বলা মাত্রই রাজি হয়ে যাচ্ছেন রক্ত দেয়ার জন্য। আয়োজকরাও তারুণ্যের সাড়ায় বেশ খুশি। তারা জানান, 'এই সময়ে আমাদের ল্যাবে গিয়ে অনেকে রক্ত দিতে পারছে। পুরনো ডোনারগুলোর কাছে পৌঁছে যাচ্ছি। তারা তো দিচ্ছেই, পাশাপাশি নতুন ডোনারদের আমরা উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছি।'
শুধু রক্ত দেয়ার ক্ষেত্রেই নয়, সমাজের অবহেলিত মানুষের পাশে যারা দাঁড়িয়েছেন তাদের অধিকাংশই তরুণ। পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় বেশ কিছু তরুণ মিলে গড়ে তুলেছেন 'জন্মভূমি কুয়াকাটা' নামের একটি সংগঠন। অসহায়, মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষের মুখে আহার যুগিয়ে যাচ্ছেন এই সংগঠনের তরুণরা। বিশেষ করে লকডাউনের সময় যখন সব বন্ধ তখন পথে পথে ঘুরে বেড়ানো মানুষজন পেয়েছেন জীবন বাঁচানোর অবলম্বন।
সংগঠনটির এক সদস্য জানান, 'নিজেরাই রান্না করি, নিজেরাই প্যাকিং করি, নিজেরাই অসহায় দুস্থ মানুষদের খুঁচে বের করে তাদের কাছে গিয়ে খাবার দিয়ে আসি। আমরা বলবো আপনারাও সবাই যে যার জায়গা থেকে অসহায়দের পাশে দাঁড়াবেন।'
বিশ্বব্যাপী যখন মানুষে মানুষে বিচ্ছিন্ন থাকার কথা বলা হচ্ছে, সেখানে এসব তরুণই নীরবে নিভৃতে কাজ করে চলেছেন মানুষের জন্য।