পশ্চিমবঙ্গের প্রখ্যাত কবি শঙ্খ ঘোষ করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
আজ বুধবার (২১ এপ্রিল) সকালে ৮৯ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। গায়ে জ্বর নিয়ে গত সপ্তাহে করোনা পরীক্ষা করিয়েছিলেন তিনি। ১৪ এপ্রিল বিকেলে জানা যায়, তিনি করোনা পজিটিভ।
কোভিড আক্রান্ত হওয়ার পর ঝুঁকি না নিয়ে বাড়িতেই আইসোলেশনে ছিলেন এই কবি। হাসপাতালে যেতে চাননি, তাই বাড়িতেই চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু মঙ্গলবার রাতে আচমকাই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। বুধবার সকালে তাঁকে ভেন্টিলেটরে দেয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে চলে গেলেন কবি। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ ভেন্টিলেটর খুলে নেয়া হয়। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
দীর্ঘ কর্মজীবনে নানা ভূমিকায় দেখা গিয়েছে শঙ্খ ঘোষকে। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্বভারতীর মতো প্রতিষ্ঠানে অধ্যাপনাও করেছেন। ইউনিভার্সিটি অব আইওয়ায় ‘রাইটার্স ওয়ার্কশপ’-এও শামিল হন তিনি। বছর দুয়েক আগে ‘মাটি’ নামের একটি কবিতায় কেন্দ্রীয় সরকারের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধেও গর্জে উঠেছিলেন তিনি।
বাংলা কবিতার জগতে শঙ্খ ঘোষের অবদান কিংবদন্তিপ্রতিম। ‘দিনগুলি রাতগুলি’, ‘বাবরের প্রার্থনা’, ‘মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে’, ‘গান্ধর্ব কবিতাগুচ্ছ’ তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ হিসেবেও তাঁর প্রসিদ্ধি সর্বজনবিদিত।
দীর্ঘ সাহিত্যজীবনে একাধিক সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন শঙ্খ ঘোষ। ১৯৭৭ সালে ‘বাবরের প্রার্থনা’ কাব্যগ্রন্থটির জন্য তিনি দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পান।
১৯৯৯ সালে কন্নড় ভাষা থেকে বাংলায় ‘রক্তকল্যাণ’ নাটকটি অনুবাদ করেও সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পান তিনি। এ ছাড়াও রবীন্দ্র পুরস্কার, সরস্বতী সম্মান, জ্ঞানপীঠ পুরস্কার পেয়েছেন। ২০১১ সালে তাঁকে পদ্মভূষণে সম্মানিত করে ভারতের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকার।