কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর সৈয়দ মো. সোহেলসহ দু'জনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মাসুদ (৩৯) নামে আরও এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় কুমিল্লার চান্দিনা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতর মাসুদ কাউন্সিলর সোহেল হত্যা মামলার ৯ নম্বর আসামি। তিনি কুমিল্লা মহানগরীর ১৬নং ওয়ার্ডের সাংরাইশ বেকারী গলির মঞ্জিল মিয়ার ছেলে। কুমিল্লা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সোহান সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, গত বুধবার সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সুমন নামের মামলার চার নম্বর আসামিকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি কুমিল্লা মহানগরীর ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সুজানগর পূর্বপাড়া বৌবাজার এলাকার মৃত কানু মিয়ার ছেলে।
ঘটনার পরদিন গত মঙ্গলবার রাত সোয়া ১২টার দিকে কাউন্সিলর সৈয়দ মো. সোহেলের ছোট ভাই সৈয়দ মো. রুমন বাদী হয়ে নগরীর ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের শাহ আলমসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
এদিকে, এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় একটি সিসিটিভি ক্যামেরায় ধারণ করা সন্ত্রাসীদের গুলি করার একটি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা গেছে কাউন্সিলর সোহেলের অফিস থেকে প্রায় ৫০ গজ পশ্চিমে মুখোশপরা দুই অস্ত্রধারীর আশপাশের বাসাবাড়িতে গুলি করছেন।
২ মিনিট ৪৯ সেকেন্ডের ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, কাউন্সিলর কার্যালয় থেকে পশ্চিম দিকে সুজানগর থেকে পাথুরিয়াপাড়া সড়কে মুখোশ পরা দুই যুবক প্রকাশ্যে গুলি চালাচ্ছেন। এসময় আশপাশের সব দোকানপাট বন্ধ ছিল। রাস্তায়ও কাউকে চলাচল করতে দেখা যায়নি। তবে তখন সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য করে স্থানীয়রা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে উত্তেজিত হয়ে গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে পালিয়ে যায় তারা। এর কিছুক্ষণ পরই স্থানীয়রা বাড়িঘর থেকে বের হয়ে দৌড়ে পূর্ব দিকে কাউন্সিলরের কার্যালয়ের দিকে যান।
অন্যদিকে, কাউন্সিলর সোহেলসহ জোড়া খুনের আসামিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে কুমিল্লা সিটি মেয়র মো. মনিরুল হক সাক্কুর নেতৃত্বে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে মেয়র সাক্কু বলেন, কুমিল্লার ইতিহাসে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি। আমরা সিটি কর্পোরেশনের সকল কাউন্সিলরসহ নগরবাসী এক হয়েছি। আমরা খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
উল্লেখ্য, গত ২২ নভেম্বর সোমবার বিকেলে কার্যালয়ে গুলি করে হত্যা করা হয় ১৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ মোঃ সোহেল ও তার সহযোগী হরিপদ সাহাকে। এ সময় আরো ৪ জন গুলিবিদ্ধ হয়।