প্রাথমিক বিদ্যালয় হয় পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত হলেও, বান্দরবানের আলীকদমের গহীনে তম্ বা সূর্য ভালুক স্কুলটি (সান বিয়ার স্কুল) ক্লাস ফোর পর্যন্ত। বাধ্য হয়ে ক্লাস ফাইভ অন্য একটি স্কুলে পড়তে হয়।
আর্থিকভাবে কম সমর্থরা সেটি পারে না। তাছাড়া, তম্ স্কুলের নিজেরই রয়েছে নানা সীমাবদ্ধতা।
বান্দরবানের আলীকদম উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে এক দুর্গম পাহাড়ি গ্রাম, রুইতনপাড়ায় অবস্থিত তম্ বিদ্যালয় বা সান বিয়ার স্কুল।
বেসরকারি সংস্থা ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্স (সিসিএ) এই প্রাথমিক স্কুলটি নির্মাণ করে দিলেও রয়েছে নানা সীমাবদ্ধতা। স্কুল হিসেবে অনেক দিক দিয়েই অপূর্ণ এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
তম্ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আকিলা ত্রিপুরা বলেন, "একটা হারমোনিয়াম, বাচ্চাদের খেলাধূলার সরঞ্জাম, চক, ডাস্টার, খাতা, কলম- এই সমস্ত সহযোগিতা করলে তো আমরা, এই স্কুল খুব উপকৃত হতো। ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত ব্যবস্থা করে পড়তে পারলে, সেন্টারটা খোলার জন্য সহযোগিতা করলে ভবিষ্যতে আরো বেশি উপকার হবে।"
স্কুলটির অন্যতম সীমাবদ্ধতা, এটি ক্লাস ফোর পর্যন্ত। বর্তমানে শিক্ষার্থী সংখ্যা ৫২ জন। ২০১৫ সালে চালু হওয়া স্কুলটি থেকে এ পর্যন্ত চার জন ক্লাস ফাইভে উঠেছে।
তম্ স্কুলের এক শিক্ষার্থীর বাবা জানান, তম স্কুলে ক্লাস ফোর পর্যন্ত পড়ার পর তার ছেলেকে পাশের এলাকার কুরুকপাতা ইউনিয়ন প্রাথমিক স্কুলে, হোস্টেলে রেখে ক্লাস ফাইভে পর্যন্ত পড়ান। এখন সে আলীকদমে ক্লাস সিক্সে পড়ছে।
কিন্তু আরেক শিক্ষার্থীর বাবা জানান, তার ছেলে তম্ স্কুল থেকে ক্লাস ফোর পাশ করেছে, কিন্তু আর্থিক সামর্থ্য নেই বলে তাকে অন্য স্কুলে তাকে দিতে পারেননি।
অভিভাবকরা বলছেন, বরং তম স্কুলকেই অন্তত ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত উন্নীত করাটা জরুরি।
ক্লাস ফাইভে উন্নীত করার চেষ্টার পাশাপাশি নিজেদের সামর্থ্য বাড়াতে চায় স্কুল নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্সও।
ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্সের গবেষক শাহরিয়ার রহমান সিজার বলেন, "আমরা বিশ্বাস করি যে কোনো সামাজিক পরিবর্তন আনতে হলে সময় লাগে, এবং সেটা কোনো সময়ের মধ্যে বেঁধে দিলে আসলে সেই লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হয় না। আর্থিক সীমাবদ্ধতা আছে, সেটার মধ্যে থেকে আমরা কাজ করছি, কিন্তু ভবিষ্যতে সেটাই আমাদের মূল লক্ষ্য যাতে এদেরকে আরো ভালোভাবে আমরা শিক্ষাদান করতে পারি।"
সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকেই চাইছে, সকল সীমাবদ্ধতার ঊর্ধ্বে গিয়ে স্কুলটি উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের সুনজরে পড়ুক। এক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকাই মুখ্য বলে মনে করছেন তারা।