ঢালিউড, বিশেষ প্রতিবেদন

চলচ্চিত্রের অনুদান নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ

শামীম আহমেদ

ডিবিসি নিউজ

বৃহঃস্পতিবার ৮ই জুলাই ২০২১ ০৪:০৯:২৫ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

চলচ্চিত্রের অনুদান নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগে সরব হয়েছেন প্রযোজক ও পরিচালকেরা। এবারের মনোনীত বিশটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে কয়েকটিকে নিয়ম ভেঙে অনুদান দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলছেন নির্মাতা ও প্রযোজকরা।

২০২০-২০২১ অর্থবছরে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক, শিশুতোষ এবং সাধারণ শাখায় মোট বিশটি বাংলা চলচ্চিত্রকে অনুদান দিচ্ছে সরকার। নিয়ম অনুসারে এই অনুদান পাবেন শুধু বাংলাদেশি নাগরিকেরা। কিন্তু কানাডার নাগরিকত্বধারী চিত্রনায়িকা অরুনা বিশ্বাস ও ইতালির নাগরিক আব্দুস সামাদ খোকনের অনুদান পাওয়া নিয়ে ক্ষুব্ধ নির্মাতারা।

চিত্রপরিচালক গোলাম মোস্তফা শিমুল বলেন, 'অরুনা দি একজন সিনিয়র মানুষ ও একজন ভালো অভিনেত্রী। কিন্তু উনার নির্মাণের সঙ্গে কখনোই যোগাযোগ নাই। কেন তাকে দেয়া হলো এটা আমাদের সবার কাছে খুব অবাক লেগেছে। বারে বারে দেখা গেছে কিছু মানুষ ঘুরেফিরে আসছে। এটা কেন?'

অনুদান পেতে হলে আগে অন্তত একটি চলচ্চিত্র নির্মাণের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। অভিযোগ ওঠেছে সে নিয়ম মানা হয়নি বদরুন নেছা খানম, লুবনা শারমিন, তামান্না সুলতানাসহ কয়েকজনের ক্ষেত্রে।

জাজ মাল্টিমিডিয়ার সিইও আলিমুল্লাহ খোকন জানান, 'নীতিমালা অনুসারে যদি দিতে হয় তাহলে ওই পরিমাণ ছবিই জমা পড়েনি। যদি জমা না দেয় তাহলে কি বাইরের লোককে দেয়া হবে? কখনো সিনেমা বানায়নি নাটকের লোককে দিয়ে দেয়া হয়েছে। পরিচালনা, পরিবেশনা, প্রযোজন কোনটিই করেনি, তাহলে কিভাবে দিলো?'

এছাড়া রয়েছে ঘুরে ফিরে অল্পকিছু মুখের অনুদান পাওয়ার অভিযোগ। সেই সাথে গত বছর অযোগ্য বিবেচিত চিত্রনাট্য আবার জমা দিয়ে এই বছর অনুদান পাওয়ার অভিযোগ এসেছে অন্তত পাঁচটি চলচ্চিত্রের বিরুদ্ধে।

নির্মাতা জসিম আহমেদ জানান, 'এমন মানুষকে বার বার দেয়া হচ্ছে যারা সরকারি অনুদানে ছবি বানিয়েছে কোনভাবে। একটা হলে কোনমতে রিলিজ করেছে। ওইটা ছবি হয়েছে কি-না সেটা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তারাই আবার ঘুরেফিরে পাচ্ছে।'

প্রযোজক শাহ আলম বলেন, 'আশা করি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় পুনঃবিবেচনা করে যারা যোগ্যতাসম্পন্ন তাদেরকেই অনুদান দিবে।'

মূলত ভালো গল্প এবং রুচিশীল চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য অর্থাভাবে থাকা চলচ্চিত্র নির্মাতাদের প্রেরণা দিতেই দেওয়া হয় অনুদান। তাই অনুদানের টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে নীতিমালাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার এই প্রবণতা চলচ্চিত্র শিল্পকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে বলে মনে করেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা।

তরুণ নির্মাতারা মনে করেন নীতিমালা ও আইন মেনে অনুদান নিশ্চিত করার মধ্য দিয়েই সম্ভব চলচ্চিত্র শিল্পের সার্বিক উন্নয়ন।

চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ইলা জাহান নদী বলেন, 'চলচ্চিত্র ক্ষেত্রে সত্যিকারের উন্নয়ন করতে হলে আমার মনে হয় সরকারি অনুদানের বাজেটটা বাড়ানো জরুরি। অনেক সৃষ্টিশীল মানুষ আছে যারা চলচ্চিত্র নির্মাণে আগ্রহী, তাদের আগ্রহটাকেও উৎসাহ দেয়াটাও জরুরি।'

এবার বিশটি চলচ্চিত্রের জন্য প্রায় বারো টাকা অনুদান দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও শর্ট ফিল্ম বাবদ দেওয়া হচ্ছে আরো দুই কোটি টাকা।

আরও পড়ুন