মসজিদে জায়গা না হওয়ায় নামাজের জন্য চার্চ ছেড়ে দিলো খ্রিস্টানরা, গির্জায় জুমার নামাজ আদায়।
করোনাভাইরাসের কারণে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে জুমার নামাজে মসজিদে জায়গা না হওয়ায় জার্মানির বার্লিনের একটি চার্চ ছেড়ে দেয়া হয়েছে মুসলিমদের জন্য। করোনাকালে এমন চিত্র বিশ্বের অন্য সব দেশের জন্য অনন্য নজির হয়ে থাকবে বলছেন প্রার্থনা করতে আসা মুসলিমরা।
করোনার কারণে বজায় রাখতে হবে সামাজিক দূরত্ব। তাই একসঙ্গে অনেকজন মিলে মসজিদে নামাজ আদায় করা সম্ভব হচ্ছিল না। আর এই সংকট কাটাতে খুলে দেয়া হলো চার্চ। আর সেখানে বসে জুমার নামাজ পড়ছেন মুসল্লিরা।
অন্যদিনগুলোর চেয়ে বেশি মানুষ জুমার নামাজ আদায় করতে আসে জার্মানির বালির্নে দার-উস-সালাম মসজিদে। আর সেখানে সবাইকে জায়গা দেয়া সম্ভব না হওয়ায় সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসে মার্থা লুথারান চার্চ কর্তৃপক্ষ। মুসলিমদের সেখানে নামাজ আদায়ের জন্য দেয়া হয় অনুমতি।
চার্চের যাজক মনিকা ম্যাথিয়াস বলেন, এই সংকটময় পরিস্থিতির মধ্যে এখানে যা হচ্ছে তা সবার জন্যই আশীর্বাদ। করোনা আমাদের একে অপরকে আরো কাছে থেকে জানার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। সামনে কেমন দিন আসছে জানি না, তবে আমাদের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন আরো মজবুত হচ্ছে এটা বলতে পারি।
আর জুমার নামাজ আদায়ের সংকট কেটে যাওয়ায় আনন্দিত মুসল্লিরাও।
জার্মানির দার-উস-সালাম মসজিদের ইমাম মোহাম্মদ তাহা সাবরি বলেন, করোনার কারণে বিশেষ করে জুমার দিনে মসজিদে সবাইকে জায়গা দেয়া যাচ্ছিল না। চার্চ কর্তৃপক্ষ এখানে নামাজ আদায়ের অনুমতি দিয়ে সম্প্রীতির অনন্য নজির দেখিয়েছেন। এখানে এসেও আমার মনে হয় আমরা আল্লাহর ঘরেই আছি।
জার্মানিতে ৪ঠা মে থেকে খুলে দেওয়া হয় মসজিদ, চার্চসহ ধর্মীয় উপাসনালয়গুলো। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রার্থনা করতে হবে, এমন শর্ত থাকায় বিপাকে পড়তে হয় মুসলমানদের। কারণ একসঙ্গে ৫০ জনের বেশি নামাজ আদায় করতে পারবেন না। এমন পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চার্চে এসে প্রার্থনা করার আহ্বান জানানো হয় মুসলিমদের।
ফলে জুমার দিনে চার্চে এসে নামাজ পড়ছেন মুসলমান সম্প্রদায়। আর রবিবার আসলে আবার প্রার্থনা করতে আসছেন খ্রীস্টানরা। করোনা সংকট ভুলিয়ে দিয়েছে ভেদাভেদ, একছাদের নীচে এনেছে সবাইকে এমনটাই বলছেন বার্লিনবাসী।