জীবন যেখানে পরাজিত জীবিকার কাছে।
পেটের দায়ে জীবনঝুঁকি নিয়েই রাজধানীতে কাজ করছে নিম্ন আয়ের মানুষেরা। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সাধারণ ছুটি চললেও জীবনের প্রয়োজনে ছুটি মেলেনি তাদের। তারা বলছেন, কোন সহায়তা না পেয়ে বাধ্য হয়েই কাজে বের হচ্ছেন তারা।
কদিন আগেও রাজধানীর একটি পোষাক কারখানায় ভাল বেতনে চাকরি করতেন এই নারী। কিন্তু দেশব্যাপী করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে ঘোষিত সাধারণ ছুটিতে চাকরি হারিয়েছেন। পরিবারের সদস্যদের মুখে ভাত তুলে দিতে ঝুঁকি নিয়ে তাই রাস্তায় রাস্তায় সিগারেট আর পান-সুপারি বিক্রি করেন তিনি।
তিনি জানান, আমি পড়াশোনা জানি। একটা ভালো চাকরি খুঁজছি আমি। চাকরি না পাওয়া পর্যন্ত আমাকে এই কাজই করতে হবে।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার তথ্য অনুযায়ী করোনার কারণে আগামী ৩ মাসের মধ্যে বিশ্বে ১৯ কোটি মানুষ চাকরি হারাবে। বাংলাদেশে এই সংখ্যা হতে পারে দেড়কোটি ।
স্বপ্নগুলোকে অনেক আগেই জীবন থেকে কেড়ে নিয়েছে সীমাহীন দারিদ্র। শ্রমজীবী-মেহনতি এসব মানুষের অন্নহীন ঘরে এখন চলছে করোনাভাইরাসের সঙ্গে অসম লড়াই। যেখানে জীবন প্রতিনিয়তই পরাজিত হচ্ছে জীবিকার কাছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সবশেষ শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, দেশের ৮৫ শতাংশ কর্মজীবী মানুষ দিন এনে দিন খায়। সংখ্যায় তারা ৫ কোটির বেশি। করোনা সংক্রমণের ভয়ে সবাই যখন ঘরবন্দি তখন জীবিকার সন্ধানে ঘরের বাইরে এই সব খেটে খাওয়া মানুষ।
সরকারের খাদ্য ও অর্থ সহায়তা না পাওয়ায় বাইরে কাজ করা ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই তাদের কাছে। দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে ক্লান্ত মানুষগুলোর ঝাপসা চোখে একটিই প্রশ্ন, এই অন্ধকার কাটবে কবে?