মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিসংশন তদন্তে ডেমোক্র্যাটদের সহায়তা না করার ঘোষণা দিয়েছে হোয়াইট হাউজ।
ডেমোক্র্যাটদের কাছে দেয়া চিঠিতে এই তদন্তকে ভিত্তিহীন এবং অসাংবিধানিক বলে আখ্যা দেয় হোয়াইট হাউজ। চিঠিতে বলা হয়, মার্কিন জনগণের প্রতি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন নিশ্চিত করতে তার প্রশাসন এই তদন্তে সাহায্য করবে না।
ইউক্রেন ইস্যুতে ট্রাম্পের অভিশংসনে তদন্ত করছে হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসের তিনটি কমিটি। ট্রাম্প প্রশাসন এই তদন্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করলেও তাদের সাংবিধানিক ক্ষমতা রয়েছে বলে দাবি ডেমোক্র্যাটদের।
আগামী বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে বাইডেন অনেকখানি এগিয়ে আছেন বলে বেশ কয়েকটি জনমত জরিপে দেখা গেছে। সম্ভাব্য প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার লক্ষেই ট্রাম্প ২৫ জুলাইয়ের ফোনালাপে ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্টকে বাইডেন ও হান্টারের দুর্নীতি তদন্তে চাপ দিয়েছিলেন বলে ধারণা সমালোচকদের।
ওই ফোনালাপের কয়েকদিন আগেই তিনি ইউক্রেইনে ৪০ কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা আটকে দিয়েছিলেন।
ডেমোক্রেটরা বলছেন, বাইডেনের বিরুদ্ধে তদন্তে চাপ দেয়ার মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট বিদেশি একটি রাষ্ট্রকে মার্কিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপের সুযোগ করে দিয়েছেন।
ট্রাম্প জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনালাপে বাইডেন ও তার ছেলের দুর্নীতি তদন্ত নিয়ে কথা বলার কথা স্বীকার করলেও অন্যান্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
প্রতিনিধি পরিষদের কমিটিগুলো ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ওঠা এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখছে। তারা এ বিষয়ে মার্কিন প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তার সাক্ষ্যও নিয়েছে।
মঙ্গলবার অভিশংসন নিয়ে তদন্ত করা একটি কমিটির কাছে ইউরোপীয় ইউনিয়নে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত গর্ডন সন্ডল্যান্ডের সাক্ষ্য দেয়ার কথা থাকলেও হোয়াইট হাউস তা আটকে দেয়।
কয়েক ঘণ্টা পর হোয়াইট হাউসের কাউন্সেল প্যাট সিপোলোনে শীর্ষ ডেমোক্র্যাট নেতা, প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি এবং কংগ্রেসনাল তিন কমিটির ডেমোক্র্যাট চেয়ারম্যানদের কাছে পাঠানো ৮ পৃষ্ঠার চিঠিতে অভিশংসন তদন্তে সহযোগিতা করা হবে না বলে আনুষ্ঠানিকভাবে জানান।
চিঠিতে কংগ্রেসে কোনো ধরনের ভোট ছাড়াই এ ধরনের তদন্তে আপত্তি জানানো হয়। ডেমোক্রেটরা ২০১৬ সালের নির্বাচনের ফল বদলে দেয়ার চেষ্টা করেছিল অভিযোগ করে সিপোলোনে অভিশংসন তদন্তকে ‘সাংবিধানিকভাবে অবৈধ’ অ্যাখ্যা দেন।
“এ পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তার প্রশাসন আপনাদের দলীয় এবং অসাংবিধানিক তদন্তে অংশ নিতে পারে না,” চিঠিতে বলেছেন তিনি।
হোয়াইট হাউসের এ চিঠিতে অভিশংসন তদন্তকে ‘ভুলভাবে উপস্থাপন’ করা হয়েছে মন্তব্য করে প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার পেলোসি বলেছেন, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলেও আইনের উর্ধ্বে নন।
“মিস্টার প্রেসিডেন্ট, আপনি আইনের উর্ধ্বে নন। আপনাকেও জবাবদিহি করতে হবে,” বলেছেন তিনি।
এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও জরিপ সংস্থা ইপসসের এক জনমত জরিপে দেখা গেছে, ডেমোক্র্যাট সমর্থকদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশই ট্রাম্পকে অভিশংসনে সর্বশক্তি নিয়োগে আগ্রহের কথা বলেছেন। এ পদক্ষেপ যদি ২০২০ সালের নির্বাচনে তাদের জয়ের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয় তাতেও আপত্তি নেই তাদের।