রাজনীতি, বিশেষ প্রতিবেদন

তালেবানি রাষ্ট্র বানাতে ৫ই মে'র তাণ্ডব চালিয়েছিল হেফাজত: পুলিশ

Kamrul Islam Rubel

ডিবিসি নিউজ

বুধবার ৫ই মে ২০২১ ০৯:২১:৪০ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

ক্ষমতা দখল করে তালেবানি রাষ্ট্র কায়েম করতে হেফাজতে ইসলামের সেই ভয়াল তাণ্ডবের আট বছর আজ।

একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ সাজার দাবিতে ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে গণজাগরণ শুরু হলে কিছুদিন পর ব্লগার-নাস্তিকদের শাস্তির দাবিতে সক্রিয় হয়ে ওঠে হেফাজতে ইসলাম। ১৩ দফা দাবিতে ওই বছরের ৫ই মে রাজধানীতে ছয়টি প্রবেশমুখে অবরোধ কর্মসূচি শেষে শাপলা চত্ত্বরে অবস্থান নেয় কওমী মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠনটি। তাদের সেদিনের কর্মসূচীতে সমর্থন দেয় বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলাম।

৫ই মে ঢাকা অবরোধকে কেন্দ্র করে সহিসংতা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সারাদেশে ৮৩টি মামলা হয়েছিল। এরমধ্যে ৬১টি মামলার তদন্ত শেষ হয়নি এখনো। তবে, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকে ঘিরে ফের হেফাজতের সহিংসতার পর আগের মামলার তদন্ত শেষ করার উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ।

মতিঝিল, পল্টনসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে মেতে ওঠে হেফাজত নেতা-কর্মীরা। সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন জেলায়ও। তাণ্ডবের শিকার হয় সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। অবশেষে রাতে অপারেশন সিকিউর শাপলার মুখে পিছু হটে হেফাজত।

৫ই মের তাণ্ডবে সারাদেশে ৮৩টি মামলায় আসামি হেফাজত, জামায়াত, বিএনপির প্রায় ৮৫ হাজার নেতা-কর্মী। আট বছরে মোটে ২২ মামলায় অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। এরমধ্যে বিচারিক আদালতে রায় হয়েছে একটিতে। বাকি একষট্টি মামলার তদন্ত আট বছর ধরে চলছে। তবে সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফরের বিরোধিতায় হেফাজত ফের সহিংসতায় জড়ালে এসব মামলার তদন্ত দ্রুত শেষ করার উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ।

ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, ;মামুনুক হককে জিজ্ঞাসাবাদে একটা বিষয় স্পষ্ট হয়েছে হেফাজতের আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য ছিলো সরকার পতনের আন্দোলন। এ হামলার ঘটনা বিএনপি-জামায়াতের জড়িত থাকার বিষয়টি এখন প্রতিষ্ঠিত সত্য।

পুলিশ জানিয়েছে, ৫ই মে'র তাণ্ডবের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে তালেবানি রাষ্ট্র কায়েম করতে হেফাজতের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল বিএনপি-জামায়াত।

ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার সৈয়দ নুরুল ইসলাম জানান, সেদিন যদি হেফাজত শাপলা চত্ত্বর থেকে বিতাড়িত না হত তাহলে হয়তো তালেবান রাষ্ট্র গঠিত হতে পারতো।

আট বছর আগের মামলাগুলোর পুনঃতদন্ত দাবি করে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলছেন, 'রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া হেফাজতকে সমূলে বিনষ্ট করার সময় হয়েছে।'

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে সহিংসতার দায়ে হেফাজত নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ঢাকাসহ সারাদেশে আরও ৭৪টি মামলা হয়েছে। এসব মামলার তদন্তও দ্রুত শেষ করে জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করার প্রক্রিয়া চলছে।

আরও পড়ুন