বাংলাদেশ, জেলার সংবাদ

পরকীয়ায় জড়িয়ে ভাই-বোনের বিয়ে

শামীম আহমেদ

ডিবিসি নিউজ

শনিবার ১৯শে অক্টোবর ২০১৯ ১০:১৭:৩৫ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

জয়পুরহাটে পরকীয়ার এক পর্যায়ে ভাই ও বোনের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এদিকে, ঘটনা জানাজানির পর সর্বত্র তাদের বিচারের দাবি উঠেছে।

শনিবার, ক্ষেতলাল উপজেলার তারাকুল গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রশিদের প্রথম স্ত্রীর ছেলে শিজু (৩৫) এবং দ্বিতীয় স্ত্রীর মেয়ে রাজিয়া খাতুন (২৬) পালিয়ে গিয়ে নিকা-বিবাহ রেজিষ্ট্রিমূলে বিয়ে করেন বলে জানান তাদের বাবা-মা ও প্রতিবেশীরা।

এজন্য, তাদের শাস্তির দাবি করছেন সচেতন মহল। আর, এ বিবাহ বৈধ নয় বলছেন আলেম ওলামারা।

পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা জানান, বিয়ে করা ভাই-বোন শিজু ও রাজিয়ার বাবা আব্দুর রশিদ প্রথম স্ত্রীকে নিয়ে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার কিচক হরিপুর গ্রামে বসবাস করেছিলেন। তখন তাদের সংসারে ছেলে শিজু জন্ম নেয়। তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদের পর, আব্দুর রশিদ জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার তারাকুল গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের মেয়ে মাহমুদা খাতুনকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এরপর, তাদের সংসারে জন্ম নেয় মেয়ে রাজিয়া খাতুন। ছেলে শিজু ও মেয়ে রাজিয়াকে আব্দুর রশিদ উপযুক্ত বয়সে অন্যত্র বিয়েও দেন। তাদের সংসারেও ছেলে-মেয়ে জন্ম নেয়। তবে এরমধ্যে, বাবার বাড়িতে শিজু ও রাজিয়ার আসা-যাওয়ার মাঝে সৃষ্টি হয় পরকীয়া।

শনিবার, বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ময়দানহাটা ইউনিয়ন কাজী অফিসে গিয়ে তারা দু’জন বিয়ে করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন নিকাহ-বিবাহ রেজিষ্ট্রার কাজী মাসুম বিল্ল্যা। তবে তিনি বলেন, 'এ বিবাহের রেজিষ্ট্রি নিয়ে বেশ ঝামেলায় আছি। বিভিন্ন মহল থেকে মোবাইলে কল আসছেই।'

তারাকুল গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল জব্বার বলেন, 'কয়েক বছর আগে রাজিয়ার বিয়ে হয় জয়পুরহাট শহরের বিশ্বাস পাড়াতে মজনুর সাথে। রাজিয়া দুই সন্তানের মা। বাবার বাড়িতে যাওয়া-আসার একপর্যায়ে ওর সৎ ভাইয়ের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে।'

তাদের মামা আব্দুল হান্নান তাদের বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, 'বিয়ের আগে অনৈতিক মেলামেশার কারনে গ্রামবাসী আটক দিয়ে মারপিট করে তাদের দুইজনকে ক্ষেতলাল থানায় সোপর্দ করেছিলো। সে সময় তারা দুজনেই এমন কাজে নিজেদের জড়াবেন না বলে মুচলেকা দেন থানাতে।'

শিজু ও রাজিয়ার বাবা আব্দুর রশিদ বলেন, 'নিজের জন্ম দেওয়া সন্তানরা এমন কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়বে তা কোন বাবা-মা সহ্য করতে পারবেনা। এমন ঘটনা জানার পর থেকেই আমি আর বাইরে বের হতে পারছিনা।'

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একটি কামিল মাদ্রাসার প্রধান বলেন, 'এ বিবাহ বৈধ নয়। যে কোন বিবাহ রেজিষ্ট্রি হলে সরকার ফি পাবে, কিন্তু একই বাবার দুই স্ত্রীর ছেলে-মেয়ের মধ্যে বিবাহ হলে সেটা বৈধ হবে না।'

ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরাফাত হোসেন বলেন, 'এমন ঘটনা কখনও শুনিনি। তবে, এ বিবাহ সামাজিক স্বীকৃতি পাওয়ার কথা নয়।'

আরও পড়ুন