জাতীয়, অর্থনীতি

মহামারিতে বেড়েছে শ্রম বঞ্চনা

Kamrul Islam Rubel

ডিবিসি নিউজ

শনিবার ১লা মে ২০২১ ১২:২১:০৫ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

চাকরি হারিয়েও মেলেনি শ্রম আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণসহ ন্যায্য পাওনা।

মহামারির এক বছরে ঢালাওভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে শ্রম অধিকার। চাকরি হারিয়েও মেলেনি শ্রম আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণসহ ন্যায্য পাওনা। শ্রমিক নেতারা বলছেন, অতিমারির দুঃসময়ে অধিকার হরণের অবাধ সুযোগ নিয়েছেন মালিকরা। অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের অবস্থা আরো খারাপ। কর্মহীন সময় গেলেও, মেলেনি কোন ধরনের সরকারি সহায়তা।

দুঃসময়ে সূর্যটাও সদয় নয়। ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রার আগুনে দুপুরে মাথায় ৩৫ কেজি ওজনের বোঝা। একেকটি টুকরির মজুরি মাত্র চার টাকা। হাসফাস করা দিনে আগের চেয়ে বিশ্রাম বেশি নিতে হচ্ছে। তাই আয় কমেছে। একেক দিনে ৫০০ টাকা রোজগার করাও কঠিন। তবুও ঘরভাড়া, খাওয়া-দাওয়ার জন্য কারো কাছে হাত পাততে হচ্ছে না। গত বছরের তিক্ত সময়কে পেছনে ফেলতে পেরেছেন তারা-এটুকুই স্বস্তি।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, এমন দুঃসহ সময় পাড়ি দিতে হয়েছে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের ৫ কোটি ১৭ লাখ ৩৪ হাজার শ্রমিককে। নিয়োগ বা কাজের চুক্তিপত্র না থাকায়, মহামারির সময় সবধরনের সরকারি সহায়তার বাইরে ছিলো দেশের ৮৫ ভাগ শ্রমশক্তিই।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) জ্যেষ্ঠ গবেষক ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, অনানুষ্ঠানিকখাতের শ্রমিকদের যাদের আনুষ্ঠানিকখাতে অন্তর্ভুক্ত করা যায় না তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো ব্যবস্থা হচ্ছে তাদের জন্য খন্ডকালীন কর্মের সুযোগ তৈরি করা।

প্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিয়োগপত্র আছে। আছে আইনি সুরক্ষার ঢালও। তবুও লাভ হয়নি। গেলো বছরের মাঝামাঝি পর্যন্ত হিসাব বলছে, শুধু পোশাকশিল্পেই ছাঁটাই হয়েছেন ৭০ হাজার শ্রমিক। অন্যান্য খাত ধরলে হিসাবটা লাখ ছাড়াবে।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন, 'যেকোনো মুহুর্তে শ্রমিকদের চাকরিচ্যুত করার সুযোগ মালিকপক্ষ নিচ্ছেই। কিন্তু যেসব প্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ড আছে তারা পণ্যের ক্রয়াদেশ বেশি বেশি দিচ্ছে। কিন্তু, তারা শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে নজর দিচ্ছে না।'

গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইজিডি ও পিপিআরসির সাম্প্রতিক যৌথ জরিপ বলছে, করোনার প্রথম ধাক্কায় চাকরি হারানো শ্রমিকদের ৮ শতাংশ এখনো বেকার। যারা কাজ পেয়েছেন, বেশিরভাগই যোগ দিয়েছেন আগের চেয়ে কম মজুরিতে। তাই সপ্তাহে একদিনও মাংস জোটেনা ৫২ শতাংশ শ্রমজীবীর। দুধ খেতে পাননা ৭২ শতাংশ আর ফল কেনার সামর্থ্য হারিয়েছেন ৪০ শতাংশ শ্রমজীবী।

আরও পড়ুন