জাতীয়

মহামারীতে মানবতার সেবা অব্যাহত রাখার আহবান প্রধানমন্ত্রীর

ময়ূখ

ডিবিসি নিউজ

শনিবার ১৭ই অক্টোবর ২০২০ ১১:১২:০৫ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসন্ন শীতে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমনের আরও বিস্তার রোধ করার বিষয়ে দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করে এই মহামারী চলাকালীন মানবতার সেবা অব্যাহত রাখার জন্য চিকিৎসকদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

আজ রাতে ‘ক্রিটিকাল কেয়ার-২০২০ বিষয়ক প্রথম আন্তর্জাতিক ই-সম্মেলন’ ভার্চুয়ালি উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন তিনি। বাংলাদেশ সোসাইটি অব অ্যানেসথেসিওলজিষ্টস (বিএসএ) এই সম্মেলনের আয়োজন করে। আর এমন একটা সময়ে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন সারা বিশ্বই করোনাভাইরাস মহামারীর বিরুদ্ধে লড়ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আশাবাদী যে, আগামী দিনগুলোতেও আমরা এই রোগের আরো প্রবল বিস্তার রোধ করতে সক্ষম হব।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের প্রচেষ্টা এবং চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের কঠোর পরিশ্রমই বাংলাদেশে মারাত্মক ভাইরাসের সংক্রমন রোধ করতে পারে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ জরুরী পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার জরুরি ভিত্তিতে ২ হাজার চিকিৎসক এবং ৫ হাজার নার্স নিয়োগ দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা ভাগ্যবান, কেননা এই রোগের সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার উভয়ই বাংলাদেশে খুব কম।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘চিকিৎসা একটি মহৎ পেশা এবং একজন অসুস্থ মানুষের চিকিৎসা করে তাঁরা মানবতার সেবা করছেন। কাজেই, আপনি যখন ডাক্তার হবেন, আপনার প্রথম এবং প্রধান কাজ হচ্ছে মানবতার সেবা করা। আমি আশা করবো, যে কোনও পরিস্থিতিতেই আপনি আপনার দায়িত্ব ভুলে যাবেন না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অ্যানেসথেসিওলজিস্টরা অপারেশন থিয়েটার ছাড়াও গুরুতর অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি বলেন, অস্ত্রোপচারের আগে, চলাকালীন ও পরে এবং সম্পূর্ণ প্রিঅপারেটিভ কেয়ার প্রদানে সংশ্লিষ্ট অ্যানেসথেসিওলজি’র গুরুত্ব সর্বত্র বৃদ্ধি পাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারণ, এই চিকিৎসকরা রোগীকে অচেতন করা, নিবিড় পরিচর্যার ওষুধপত্র, গুরুতর জরুরি ওষুধ এবং ব্যথার ওষুধ প্রদানে নিযুক্ত থাকেন। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা যথাযথভাবেই তাঁদের অবদানকে স্বীকৃতি দেই। আমি গুরুতর অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসা প্রদানের জন্য নিজেদেরকে যুগোপযোগী এবং কারিগরি জ্ঞানে সমৃদ্ধ করে তুলতে তাদের প্রতি আহবান চাই।’

শেখ হাসিনা বলেন, দেশের অ্যানেসথেসিওলজিষ্টরা এই মহামারী চলাকালিন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে এবং এর বাইরেও কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের ব্যবস্থাপনায় চমৎকার কাজ করে যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সোসাইটি অব অ্যানেসথেসিওলজিষ্ট সরকারকে কোভিড-১৯ রোগীদের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র ব্যবস্থানার ক্ষেত্রে গাইডলাইন প্রস্তুতিতে সহায়তা করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএসএ সারাদেশে নতুন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের ব্যবস্থা করেছে এবং আইসিইউ চিকিৎসক ও কর্মীদের কোভিড-১৯ রোগীদের ব্যবস্থাপনায় প্রশিক্ষণ দিয়েছে। তিনি বলেন, কিছু অ্যানেসথেসিওলজিষ্টসহ বেশ কিছু চিকিৎসক কোভিড-১৯ চলাকালিন কর্তব্য পালন করতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি তাঁদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।'

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার বিগত কয়েক বছরে দেশে বেশ কিছু নতুন বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেছে। অন্যদিকে বেসরকারি উদ্যেক্তারা এ খাতে বড় ধরণের উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে এসেছে। তাঁর সরকারের প্রতিষ্ঠিত প্রায় ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র দেশের গ্রামীণ জনগণের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এসব কেন্দ্র থেকে রোগীরা ৩০ প্রকারের ওষুধ বিনামূল্যে পাচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব সোসাইটি অব অ্যানেসথেসিওলজিষ্টস (ডব্লিউএফএসএ) এর বর্তমান ও এবং সাবেক কর্মকর্তাসহ দেশের ও বিদেশের চিকিৎসকদের এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘আমি আশা করি আপনারা সকলে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে লাভবান হবেন।’

আরও পড়ুন