আন্তর্জাতিক, আমেরিকা

মার্কিন ফেডারেল আদালতের বিচারক হচ্ছেন বাংলাদেশি নুসরাত জাহান

Faruque

ডিবিসি নিউজ

বৃহঃস্পতিবার ২০শে জানুয়ারী ২০২২ ১২:২৩:১৮ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আদালতের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের জন্য বাইডেনের মনোনয়ন পেলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নুসরাত জাহান চৌধুরী। সিনেটের অনুমোদন পেলে প্রথম মুসলিম ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হিসেবে নিউইয়র্কের একটি জেলা আদালতে বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন তিনি।

বুধবার নুশরাতসহ আট বিচারকের মনোনয়ন দেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।  ক্ষমতা নেয়ার পর এখন পর্যন্ত ৮৩ জন জুডিশিয়াল আইনজীবীর মনোনয়ন দিয়েছে তাঁর প্রশাসন।  নুসরাত চৌধুরী বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ সম্পর্কিত সংগঠন আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন অফ ইলিনয়ের আইনি পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন। ইয়েল ল' স্কুল থেকে পাসের পর প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জনপ্রশাসন বিষয়ে মাস্টার্স করেন তিনি। পড়েছেন কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও। এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউজ জানায়, দেশটির বিচার ব্যবস্থায় বৈচিত্র আনতে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন ঘটেছে এই পদক্ষেপের মাধ্যমে। 

নুসরাত চৌধুরী বর্তমানে আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (এসিএলইউ) এর ইলিনয় অধ্যায়ের আইনি পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন। এটি মূলত একটি নাগরিক অধিকার আদায়ের সংগঠন। তিনি এর আগে নিউইয়র্কে এসিএলইউ-এর জাতিগত বিচার কর্মসূচির উপ-পরিচালকসহ বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন।

তিনি ফেডারেল সরকারের নো ফ্লাই লিস্ট এবং নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের শহরের মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর নজরদারির বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করে মামলাসহ অসংখ্য নাগরিক অধিকারের মামলায় জড়িত ছিলেন।

২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ডেমোক্র্যাটিক সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা চাক শুমার আনুষ্ঠানিকভাবে নুসরাত চৌধুরীকে নিউইয়র্কের ফেডারেল বেঞ্চে নিয়োগ দেওয়ার জন্য সুপারিশ করেছিলেন এবং তাকে ‘নাগরিক অধিকার ও স্বাধীনতার বিশেষজ্ঞ’ বলে অভিহিত করেছিলেন।

মুসলিম-আমেরিকান ওকালতি গ্রুপ মুসলিম অ্যাডভোকেটস শুমার এবং তার সহযোগী নিউইয়র্কের সিনেটর কার্স্টেন গিলিব্র্যান্ডকে সেই বছরের শুরুতে নুসরাত চৌধুরীর মনোনয়নের জন্য অনুরোধ করেছিল।

বুধবার গ্রুপটি ‘এই ঐতিহাসিক মনোনয়ন দেওয়ার জন্য’ বাইডেন এবং শুমারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে।

মুসলিম অ্যাডভোকেটস বলছে, “নুসরাত চৌধুরী এমন এক সময়ে মুসলিম এবং অন্যান্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নাগরিক অধিকার রক্ষার জন্য তার কর্মজীবন উৎসর্গ করেছেন যখন বিচার ব্যবস্থায় স্পষ্টতই বৈষম্য চলছিল। তিনি বিচার ব্যবস্থাকে ন্যায়বিচারের দিকে ঠেলে নিয়ে যাবেন।”

“এবং এমন এক সময়ে নুসরাত চৌধুরী প্রথম মুসলিম নারী, প্রথম বাংলাদেশি-আমেরিকান এবং দ্বিতীয় আমেরিকান মুসলিম হিসেবে একজন ফেডারেল বিচারক হিসেবে কাজ করবেন যখন ঘৃণা এবং বিভাজন আমাদের আলাদা করে দিচ্ছে।”

ইউএস ফেডারেল আদালত ফেডারেল অপরাধ এবং দেওয়ানী মামলার আইনি প্রক্রিয়া তত্ত্বাবধান করে। বিচারিক পর্যালোচনা করার এবং মার্কিন সংবিধানের লঙ্ঘন করলে রাষ্ট্র ও ফেডারেল আইনগুলো রদ করারও ক্ষমতা রয়েছে তাদের।

সমস্ত মার্কিন ফেডারেল মামলা প্রথমে জেলা আদালতে শুরু হয় এবং মার্কিন আপিল আদালতে আপিল করতে পারে। আর দেশের শীর্ষ আদালত হিসেবে ফেডারেল বিচার ব্যবস্থায় আপিলের তৃতীয় এবং চূড়ান্ত স্তর হল মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট।

মার্কিন রাষ্ট্রপতি সমস্ত ফেডারেল বিচারক নিয়োগ করেন। তবে তার মনোনয়নের পর সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের মাধ্যমে তাদের নিয়োগ নিশ্চিত হতে হয়।

বুধবার হোয়াইট হাউস বাইডেনের বিচার বিভাগীয় মনোনয়নের বৈচিত্র্য তুলে ধরেছে। ফেডারেল পাবলিক ডিফেন্ডার হিসেবে আরিয়ানা ফ্রিম্যান নামে একজনকে নিয়োগ দিয়েছেন বাইডেন। যিনি তৃতীয় সার্কিটের জন্য ফিলাডেলফিয়া-ভিত্তিক আপিল আদালতে প্রথম আফ্রিকান-আমেরিকান নারী হিসেবে কাজ করবেন।

সিনেটে নিশ্চিত হলে নুসরাত চৌধুরী দ্বিতীয় মুসলিম মার্কিন ফেডারেল বিচারক হবেন। গত বছর নিউ জার্সির জেলা আদালতের প্রথম মুসলিম বিচারক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন জাহিদ এন কুরাইশি।

আরও পড়ুন