বাংলা সাহিত্যে সব্যসাচী খ্যাত লেখক সৈয়দ শামসুল হক। গল্প, কবিতা, উপন্যাস, নাটক, সিনেমা, গানসহ সাহিত্যের প্রায় সব শাখায় আছে তার অবদান। সবচেয়ে কম বয়সে পেয়েছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার। জাতীয় চলচ্চিত্র, আদমজীসহ নানা পুরষ্কার ভূষিত এই লেখকের আজ ৮৫তম জন্মদিন আজ।
আমার পরিচয় কবিতায় শামসুল হক নিজেই নিজের পরিচয় তুলে ধরেছেন। নিজেকে বাঙালী, বাংলার সাথে তার ঘনিষ্টতার কথা চরণে চরণে বলে গেছেন।
আমি জন্মেছি বাংলায়
আমি বাংলায় কথা বলি।
আমি বাংলার আলপথ দিয়ে, হাজার বছর চলি।
চলি পলিমাটি কোমলে আমার চলার চিহ্ন ফেলে।
তেরশত নদী শুধায় আমাকে, কোথা থেকে তুমি এলে ?
কবিতার সাথে তার সখ্য মাত্র এগারো বছর বয়সে। তবে কবিতা নয়, সাহিত্য ভুবনে যাত্রা গল্প দিয়েই। আর পুরোদমে লেখালেখির শুরু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রাবস্থায়। পরানের গহীন ভেতর, একদা এক রাজা, বিরতিহীন উৎসব, বৈশাখে রচিত পংক্তিমালাসহ লিখেছেন অসংখ্য কাব্যগ্রন্থ। উপন্যাস ৩৮টি।
পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায় এবং নূরলদিনের সারাজীবন বাংলা নাটকে দখল করে আছে বিশেষ স্থান। অর্থাভাব তাকে নিয়ে যায় সিনেমা ভুবনে। ১৯৫৯ সালে লিখেছেন মাটির পাহাড় সিনেমার চিত্রনাট্য। তোমার আমার, কাঁচ কাটা হীরে, বড় ভালো লোক ছিলসহ নানা সিনেমার সংলাপ কাহিনী ও চিত্রনাট্য তার। পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও।
গানের ভুবনেও ছিলেন অনন্য। চাঁদের সাথে আমি দেবো না তোমার তুলনা’ ‘যার ছায়া পড়েছে’ এমন মজা হয় না, গায়ে শোনার গয়নাসহ জনপ্রিয় অসংখ্য গানের জনকও শামসুল হক।
মুক্তিযুদ্ধের সাথে তার নিবিড় সম্পর্ক তার নানা লেখায়। নিষিদ্ধ লোবান, বৃষ্টি ও বিদ্রোহীগণ, নীল দংশন, ‘নিষিদ্ধ লোবান ‘দ্বিতীয় দিনের কাহিনী’ গল্পে মুক্তিযুদ্ধের বর্ণনা তুলে ধরেছেন। গেরিলা সিনেমার গল্প তার নিষিদ্ধ লোবান উপন্যাস থেকে নেয়া।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিবিসির খবরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণের খবরটি পাঠ করেন সৈয়দ শামসুল হক।
১৯৩৫ সালে ২৭ ডিসেম্বর কুড়িগ্রামে জন্ম নেন সব্যসাচী লেখক।