বাংলাদেশ, বিনোদন, সাহিত্য, গল্প

সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর প্রয়াণ দিবস আজ

kamrul Islam

ডিবিসি নিউজ

শনিবার ১০ই অক্টোবর ২০২০ ০১:১৯:১৪ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

নন্দিত কথাশিল্পী সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর প্রয়াণ দিবস আজ। ১৯৭১ সালের ১০ অক্টোবর না ফেরার দেশে পাড়ি দেন এই উপন্যাসিক ও নাট্যকার।

সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর জন্ম ১৯২২ সালের ১৫ আগস্ট, চট্টগ্রামের ষোলশহরে।  তার মা নাসিম আরা খাতুন ছিলেন চট্টগ্রামের এক ঐতিহ্যবাহী বংশের সন্তান, আর পিতা সৈয়দ আহমদউল্লাহ ছিলেন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা।  ওয়ালীউল্লাহর পিতা ছিলেন নোয়াখালির অধিবাসী, তবে তার সরকারি চাকরির সুবাদে ময়মনসিংহ, ফেনী, ঢাকা, হুগলী, চূঁচুরা, কৃষ্ণনগর, কুড়িগ্রাম, সাতক্ষীরা, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ প্রভৃতি জায়গায় ওয়ালীউল্লাহর শৈশব ও শিক্ষাজীবন কেটেছে।

সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ শুধু ঔপন্যাসিক হিসেবেই নন, ছোট গল্প রচয়িতা হিসেবেও সমান কৃতিত্বের অধিকারী। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর সাহিত্যচর্চা ও ছবি আঁকার ঝোঁক ছিল শৈশব থেকেই। ছাত্রাবস্থায় কলকাতায় তার প্রথম গল্পগ্রন্থ 'নয়নচারা' প্রকাশিত হয়।  সমালোচকরা এই গল্পগ্রন্থের নতুনত্ব ও স্বকীয়তা স্বীকার করেছেন।  তাঁর অধিকাংশ গল্পের পটভূমি বাংলাদেশের গ্রামীণ জীবন।  গ্রামের সমাজ জীবনের অনাচার, নানা কুসংস্কার ও ধর্মান্ধতার সার্থক চিত্র অঙ্কন করেছেন তিনি তার গল্পে।  সাধারণ মানুষের প্রতি আন্তরিক দরদ এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক ভণ্ডামির ওপর দ্বিধাহীন কশাঘাত তার রচনার অনন্যসাধারণ বৈশিষ্ট্য।

তার প্রখ্যাত উপন্যাস লালসালু। এতে তিনি বাংলার লোকায়ত সংস্কার ও ভ- ধর্মব্যবসায়ীদের স্বরূপ গভীর জীবনবোধ ও মমত্বের সঙ্গে প্রকাশ করেন। তার অন্য দুটি উপন্যাস চাঁদের অমাবস্যা (১৯৬৪) ও কাঁদো নদী কাঁদো (১৯৬৮) বাংলা সাহিত্যে দুটি ব্যতিক্রমধর্মী সৃষ্টি। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর অসাধরণ দুটি গল্পগ্রন্থ- নয়নচারা এবং দুই তীর ও অন্যান্য গল্প। নাটকের মধ্যে রয়েছে- বহিপীর (১৯৬০), তরঙ্গভঙ্গ (১৯৬৪) ও সুড়ঙ্গ (১৯৬৪)।

সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্‌ রাজনীতিসম্পৃক্ত মানুষ ছিলেন না, কিন্তু সমাজ ও রাজনীতিসচেতন ছিলেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি চাকরিহীন, বেকার। তা সত্ত্বেও বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের পক্ষে জনমত তৈরির চেষ্টা করেছেন, সঙ্গতিতে যতোটুকু কুলোয় তদানুযায়ী টাকা পাঠিয়েছেন কোলকাতায় মুক্তিযুদ্ধ তহবিলে।

৪৯ বছর বয়সে, ১৯৭১ সালের ১০ অক্টোবর ফ্রান্সের প্যারিসে ওয়ালীউল্লাহ্‌ পরলোকগমন করেন। গভীর রাতে অধ্যয়নরত অবস্থায় মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণের ফলে তার মৃত্যু হয়। প্যারিসের উপকণ্ঠে তারা একটি ফ্ল্যাট কিনেছিলেন, সেখানেই ঘটনাটি ঘটে এবং ওখানেই সমাহিত করা হয় তাকে।

আরও পড়ুন