জাতীয়, অপরাধ, রাজধানী

"হ্যালো, শীর্ষসন্ত্রাসী সুব্রত বাইন বলছি"

বুলবুল রেজা

ডিবিসি নিউজ

শনিবার ১৫ই ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৯:১০:৫০ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নাম ব্যবহার করে ফোনে চাঁদা দাবি। টার্গেট শিক্ষক, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ীরা।

প্রতারক: হ্যালো, আমি সুব্রত বাইন বলছি।

ভুক্তভোগী: কোন সুব্রত বাইন?

প্রতারক: শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত।

ভুক্তভোগী: বলেন, আমার কাছে কি চান?

প্রতারক: আমার কিছু ছেলে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত অবস্থায় ভারতে চিকিৎসাধীন আছে। ১৫ লাখ টাকা দরকার। ১০ লাখ সংগ্রহ হয়েছে। বাকিটা আপনি দিবেন। টাকা না দিলে বিপদে পড়বেন। 

কখনো সুব্রত বাইন, কখনো শাহাদাৎ কখনো বা আরমান। দেশের বাইরে থাকা এসব শীর্ষ সন্ত্রাসীর নামে রাজধানীতে চলছে চাঁদা-দাবি। সুব্রত-শাহাদত কারও সঙ্গেই এদের কখনও দেখা না হলেও কথিত এসব সন্ত্রাসী ফোনে নিজেরাই শীর্ষ সন্ত্রাসী পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করছে। তাদের টার্গেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, এমনকি রাজনীতিবিদরাও। এমন এক প্রতারক চক্রকে আটক করেছে পুলিশ।

এরকম ঘটনার শিকার রাজনীতিবিদ লতিফুন বারী হামিম। তিনি জানান, তারা প্রথমে ফোন করেই পরিচয় নিশ্চিত হয়। তারপর আমাকে বলে আমি শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন বলছি।আমার লোকজন আপনার কাছে যাবে, যা চাইবে তা দিয়ে দিবেন। তা না হলে আপনাকে ছাড়বো না।

আন্ডারওয়ার্ল্ড কাপানো শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের নামে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা দাবির ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকও। 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বলেন, আমি যখন জিডি করি তখনও শুনেছি যে তারা এমনভাবে প্রতারনা করে তাদের ধরা সম্ভব হয় না। আমি অনেক হুমকি পেয়েছি তাই এটি আমার কাছে নতুন কিছু না। তারা শুধু চাঁদাবাজির জন্য না ভয়ভীতি এবং আতঙ্কের জন্যও এসব করে থাকে।

এরকম নানান অভিযোগ বা জিডি হওয়ার পর তদন্তে নামে ডিবির সিরিয়াস ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। ধরা পড়ে তিন কথিত সন্ত্রাসী।

নিজেদের সুব্রত বাইন আরমান কিংবা শাহাদাৎ দাবি করলেও কেউই আসল নন। তাদের সঙ্গে পুলিশের তালিকায় থাকা এসব শীর্ষ সন্ত্রাসীর কখনও দেখাও হয়নি। সীমান্তবর্তী বেনাপোল ও দিনাজপুর থেকে ভারতীয় মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ফোন দিয়ে থাকেন তারা।  

পুলিশ বলছে, এই চক্রটি ৪-৫ বছর ধরে এভাবেই চাঁদাবাজি করে আসছিলো।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, দেশে শীর্ষ সন্ত্রাসী বলে এখন আর কেউ নেই। এছাড়া যেসব সন্ত্রাসী দেশের বাইরে অবস্থান করছে তাদের বাংলাদেশের সঙ্গে কোন যোগাযোগ নেই।অনেকে বিভিন্ন সন্ত্রাসীদের নাম নিয়ে চাঁদাবাজী করে থাকে।

তবে চক্রের মূল হোতা সাদেক এখনো পলাতক অবস্থায় ভারতে আছে।

আরও পড়ুন