২০৩০ সালের মধ্যে প্রতিরোধযোগ্য প্রসবকালীন ও প্রসবপরবর্তী মাতৃমৃত্যু, পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ে সব নারীর দাবি আদায় এবং নারী ও মেয়েদের প্রতি সহিংসতা নির্মূলের প্রতিশ্রুতি জানিয়ে শুরু হয়েছে নাইরোবি সম্মেলন।
নারীর ক্ষমতায়ন এবং প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মপন্থা গ্রহণের উদ্দেশ্যে ১৭৯টি দেশের অংশগ্রহণে মিশরের কায়রোতে অনুষ্ঠিত হয় ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন পপুলেশান অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইসিপিডি)। সেই আয়োজনের ২৫ বছর পূর্তিতে "আইসিপিডি টোয়েন্টিফাইভ" শীর্ষক তিন দিনব্যপী এ সম্মেলন হচ্ছে কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে।
মঙ্গলবার সম্মেলনের উদ্বোধনী দিনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর সরকার ও বেসরকারি সংস্থাসমূহের প্রতিনিধি, তরুণ ও ব্যবসায়ী সমাজের প্রতিনিধিরাসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
আইসিপিডি টোয়েন্টিফাইভ’র উদ্বোধনী দিনে জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন ইউনাইটেড নেশানস পপুলেশান ফান্ড (ইউএনএফপিএ) নির্বাহী পরিচালক ড. নাটালিয়া কানেম বলেন, "২৫ বছর আগে কায়রোতে আইসিপিডি নারী ও শিশুদের বৈশ্বিক উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসার কাজ শুরু করেছিলো। সেই লক্ষ্য অনেকটা পূরণ হয়েছে, কিন্তু ২৫ বছর আগে যেই লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিলো তা বাস্তবায়ন থেকে এখনও অনেক দূরে আমরা।"
"২৫ বছর আগে আমরা যে যাত্রা শুরু করেছিলাম তা এখনও শেষ হয়নি, বরং গন্তব্য এখনও অনেক দূরে। এখনই সময় সেই অসমাপ্ত কর্মকাণ্ডগুলো সমাধা করার।"
এখনও প্রতিদিন আট শতাধিকেরও বেশি নারী গর্ভাবস্থা ও সন্তান জন্মদানের সময় মারা যান। সারাবিশ্বে ২৩ কোটি ২০ লাখেরও বেশি নারী গর্ভবতী না হতে চাইলেও আধুনিক জন্মনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন না।
এই সম্মেলনে এই সমস্ত সমস্যা মোকাবেলা করার মাধ্যমে জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা, বাল্যবিবাহ ও মেয়েদের খতনার মতো গুরুতর সহিংসতা বন্ধের লক্ষ্য নির্ধারণে আলোচনা করা হবে।
জাতিসংঘের ডেপুটি সেক্রেটারি-জেনারেল আমিনা মোহাম্মেদ বলেন, "আইসিপিডি'র অধিকারভিত্তিক দর্শন অনুযায়ী উন্নয়নের ক্ষেত্রে অবশ্যই মানুষকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। টেকসই উন্নয়নের গতি বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনাগুলো অবশ্যই এগিয়ে নিতে হবে। মানুষ, পৃথিবী, প্রগতি, শান্তি ও পারস্পরিক সহযোগিতার জন্য আমাদের কর্মপন্থা একই।"
১২ থেকে ১৪ নভেম্বর কেনিয়ার নাইরোবিতে অনুষ্ঠিত “আইসিপিডি টোয়েন্টিফাইভ” সম্মেলনের আয়োজন করছে কেনিয়া ও ডেনমার্কের সরকার এবং ইউএনএফপিএ। ‘নাইরোবি সামিট’ নামে পরিচিত এই সম্মেলনের মূল লক্ষ্য, ১৯৯৪ সালে কায়রো সম্মেলনে অংশ নেয়া ১৭৯টি দেশের সরকারের দেয়া রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রতিশ্রুতিসমূহ সম্পূর্ণ এবং নিশ্চিতরূপে বাস্তবায়নে পদেক্ষপ নেয়া।