দুই শর্তে ২৫ মাস ২ দিন পর কারামুক্ত হলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।
বয়স ও মানবিক বিবেচনায় দুই শর্তে ৬ মাসের জন্য দণ্ড স্থগিত করে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। ২৫ মাস ২ দিনের মাথায় কারামুক্ত হলেন খালেদা জিয়া। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গুলশানের ভাড়া বাড়ি ফিরোজায় নেয়া হয়েছে খালেদা জিয়াকে। সেখানে ভাই সাইদ ইস্কান্দারের জিম্মায় থাকবেন তিনি।
বয়স ও মানবিক বিবেচনায় বাড়িতে থাকার পাশাপাশি বিদেশে না যাওয়ার শর্তে গতকাল ছয় মাসের দণ্ড মওকুফ করে সরকার। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে আজ মুক্তি পেলেন দুর্নীতির দুই মামলার ১৭ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।
এতদিন, তাকে মুক্ত করতে নানা পথ বেছে নিলেও কার্যত সরকারের ওপর কোনো চাপ তৈরি করতে পারেনি বিএনপি। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখে বোনের মুক্তি চান খালেদা জিয়ার ভাই। এ নিয়ে সরকারপ্রধানের সঙ্গেও দেখা করেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের পরিবার।
খালেদা জিয়াকে নিতে বিকেল পৌনে ৩টার দিকে বিএসএমএমইউতে পৌঁছান তার ভাই শামীম ইস্কান্দার, বোন বেগম সেলিমা ইসলাম এবং দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ শীর্ষ নেতারা। এরই মধ্যে খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসা ফিরোজা'র রান্নাঘর, থাকার ঘর, বসার ঘর, বারান্দা, বাসার লন, দরজা-জানালা, বিছানাপত্র, বাথরুম, ফ্যান-এসি, পর্দা— যা কিছু আছে, সব কিছু ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করা হয়েছে। বাসার সামনে-পেছনের বাগান, খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত গাড়ি, সিএসফের গাড়িসহ সব পরিস্কার করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তার নিজ বাসায় আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে জানান, করোনাভাইরাসের কারণে বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকার তার বয়স বিবেচনায় এবং মানবিক কারণে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার সাজা ছয় মাসের জন্য স্থগিত থাকবে। তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন এবং বিদেশ যেতে পারবেন না, এই দুই শর্তে সাজা স্থগিত থাকবে।
এদিকে, আইন মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত সুপারিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গেলে সেখানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কারামুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়। সর্বশেষ তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যায়। ফাইলে প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিলে তা যায় কারা অধিদপ্তরে। সেখানকার আনুষ্ঠানিকতা শেষে মুক্তি পেলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির দুই মামলায় ২০১৮ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি থেকে সাজা ভোগ করছেন খালেদা জিয়া। ২০১৯ সালের ১লা এপ্রিল থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন খালেদা জিয়া।