আন্তর্জাতিক, নারী

৪৪ সন্তানের মা হলেন ৩৯ বছর বয়সে!

মুহাম্মদ খালেদ হাসান

ডিবিসি নিউজ

সোমবার ৭ই অক্টোবর ২০১৯ ১০:৫৩:৪৮ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

বিগত আড়াই বছর ধরে ৩৮ সন্তানের ভরণপোষণের দায়িত্ব একাই সামলাচ্ছেন স্বামী পরিত্যক্তা ‘সিঙ্গল মাদার’!

মারিয়মের যখন তিন দিন বয়স, তখন মা তাঁকে ফেলে রেখেই চলে যান। সেই থেকে ঠাকুমার কাছে বড় হতে থাকেন ছোট্ট মারিয়ম। এর পর মাত্র ১২ বছর বয়সে তাঁর বিয়ে হয়ে যায়। এক রকম জোর করেই বিয়ে দিয়ে দেন ঠাকুমা। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই যমজ সন্তানের জন্ম দেন কিশোরী মারিয়ম। প্রথমটায় যমজ সন্তান পেয়ে খুব খুশিই হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এর পর টানা চার বার যমজ সন্তানের জন্ম দেন মারিয়ম। ততদিনে অবশ্য কিশোরী থেকে যুবতী হয়ে গিয়েছেন তিনি। আর সেই সঙ্গে বুঝে গিয়েছেন, কোথাও একটা বড়সড় সমস্যা রয়েছে।

এ দিকে অভাবের সংসারে সদস্য সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকায় অনটন আর অশান্তিও ক্রমশ বেড়ে চলে। সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চিকিত্সকের কাছে ছুটে যান মারিয়ম। চিকিৎসক তাঁকে জানিয়ে দেন, তাঁর ডিম্বাশয়ের আকার বেশ বড় এবং তিনি নিজেও অত্যন্ত ফার্টাইল। কিন্তু কোনও রকম গর্ভনিয়ন্ত্রক ওষুধ বা অস্ত্রপচার তাঁর ক্ষেত্রে প্রাণঘাতী হতে পারে! গোটা বিষয়টি নিয়ে মারিয়ম তাঁর স্বামীর সঙ্গে আলোচনা করেন, তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু মারিয়মের কথায় কান দেননি তাঁর স্বামী। ফলে এর পর চার বার একসঙ্গে তিন সন্তান (ত্রিপলেট) ও পাঁচ বার এক সঙ্গে চার সন্তানের (কোয়াড্রুপলেট) জন্ম দেন মারিয়ম।

সব মিলিয়ে মোট ৪৪ সন্তানের জন্ম দেন মারিয়ম যাদের মধ্যে ৩৮টি বেঁচে রয়েছে। বর্তমানে মারিয়মের বয়স ৩৯ বছর। আড়াই বছর আগে অন্য মহিলাকে বিয়ে করে তাঁকে পরিত্যগ করেছেন মারিয়মের স্বামী। আর বিগত আড়াই বছর ধরে ৩৮ সন্তানের ভরণপোষণের দায়িত্ব একাই সামলাচ্ছেন স্বামী পরিত্যক্তা ‘সিঙ্গল মাদার’ মারিয়ম নবট্যানজি। আফ্রিকার উগান্ডার বাসিন্দা তিনি।

উগান্ডার কামপালার উত্তরে ৫০ কিলোমিটার দূরে একটা ছোট গ্রামে ৩৮ সন্তানকে নিয়ে সংসার চালাচ্ছেন মারিয়ম। স্বামী বাড়ি থেকে বার করে দেওয়ার পর মারিয়মের ঠাকুমাই এখানে তাঁর থাকার ব্যবস্থা করে দেন। ছেলে মেয়েদের স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন মারিয়ম। নানা উপায়ে সংসার চালান তিনি।

মারিয়মের প্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানরা উপার্জনের চেষ্টার পাশাপাশি ঘরের কাজেও মা’কে সাহায্য করে। কে কোন দিন কোন কাজটা করবে, তা একটা রুটিনের মতো বানিয়ে ঘরের দেওয়ালের একপাশে টাঙিয়ে দিয়েছেন মারিয়ম। শারীরিক সমস্যা, সমাজ ও দারিদ্রের বিরুদ্ধে মারিয়মের একক মাতৃত্বের লড়াই আজও অব্যহত।

আরও পড়ুন