ভাষা আন্দোলনের ৬৯ বছর পেরিয়ে গেলেও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাননি ভাষাসৈনিকরা। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়নি রাষ্ট্রভাষা বাংলা।
তাই ক্ষোভের যেন শেষ নেই ভাষাসৈনিকদের। মায়ের ভাষার মর্যাদা রক্ষায় সরকারকে এগিয়ে আসার তাগিদ দিলেন লালমনিরহাটের ভাষাসৈনিকরা।
ভাষা সৈনিক আবদুল কাদের। বয়স ৯৩ বছর পার করেছেন। তবে এখনো মাটির প্রতি টান যেন তাঁর, মায়ের ভাষার মতো। ৫২’র ভাষা আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন আবদুল কাদের। প্রতিষ্ঠা করেছেন মাতৃভাষার অধিকার। রক্তের দামে পেয়েছেন বাংলা ভাষা। তবে সেই ভাষার মর্যাদা এখনো পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত না হওয়ায় ক্ষোভ তার।
ভাষা সৈনিক আবদুল কাদের ভাসানী বলেন,'সাধারণভাবে মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলতে যেয়ে, তার সঙ্গে আরবী, উর্দু, ইংরেজী ভাষার সংযোগ দেয়। এটা আশা আমরা করি নাই। এই লক্ষ্য আমাদের ছিলো না।'
আরেক ভাষাসৈনিক জহির উদ্দিন। শরীরে নানা রোগের বাসা। ঠিকমত চলাফেরা করতে পারেন না, অনেকটাই শয্যাশায়ী। তবে ভাষার প্রতি এতটুকুও দরদ কমেনি তার। ভাষা সৈনিক জহির উদ্দিন বলেন,'গ্রামের যারা মুর্খ মেয়ে তারাও কথায় কথায় ইংরেজী ব্যবহার করে। অথচ তার অর্থ তারা জানে না। এটা যদি সরকার কিছু না করে তবে কিছু কি করার আছে?'
বয়সের ভারে নুয়ে পড়া জহির উদ্দিনের ভাগ্যে মেলেনি কিছুই। এমনকি তার পরিবারের খবরও রাখেনি কেউ। তবুও কষ্ট নেই, চান শুধু বাংলা ভাষার যথাযথ মর্যাদা। ভাষা সৈনিক জহির উদ্দিন আরও জানান,'ভাষার উন্নতি হোক। জগাখিচুড়ি দূর হোক। এইটাই সবচেয়ে বড় চাওয়া। বাংলা ভাষাটা শুদ্ধ হোক।'
জীবনের পড়ন্ত বেলায় এসে এসব গুনী মানুষ আশা করেন, রাষ্ট্রীয় ভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে ভাষাসৈনিকদের। মিশ্রিত ভাষার ব্যবহার পরিহার করে সর্বত্র প্রতিষ্ঠিত হবে মায়ের ভাষা বাংলা।