সীমান্ত জেলা লালমনিরহাটে আবারো দেখা দিয়েছে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি। প্রতিদিনই বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। এদিকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো চালু হয়নি সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট। ফলে সংকটে রয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
লালমনিরহাটে বেড়েই চলেছে কারোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। গেল মাসে সংক্রমণের হার ১১ শতাংশ থাকলেও চলতি মাসে এসে দাঁড়িয়ে ১৮ শতাংশে। বেড়েছে মৃত্যুর হারও।
গত বছর করোনা সংক্রমণ বেড়ে গেলে জেলা সদর হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সে অনুযায়ী এ বছরের জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে সদর হাসপাতাল চত্বরে অক্সিজেন প্ল্যান্ট নির্মাণ কাজ শুরু করে স্পেকট্রা অক্সিজেন লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান।
এরই মধ্যে প্ল্যান্টটির অবকাঠমোর একটি অংশ তৈরি হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষের কাছে কবে নাগাদ হস্তান্তর হবে তা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন কথা বলছেন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান।
নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের তদারককারী জানান, 'আমাদের কাজ শেষের দিকে, দুই-তিনদিনের মধ্যে হ্যান্ডওভার করা হবে। কিছু গাছপালার জন্য পরবর্তীতে সমস্যা হতে পারে। গাছপালা কাটার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দেখে গেছে।'
স্পেকট্রা অক্সিজেন লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার মামুনুর রশীদ বলেন, 'আমার কাজ তো সব শেষ হয়ে গেছে। আমার লাইন শতভাগ চালু। এখন যদি উনারা ভেন্টিলেটর চালাতে না পারে, হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানেলার কোন সমস্যা আছে কি-না, সেটা তো আমি বলতে পারবো না। আমরা তো ইকুইপমেন্ট সাপ্লাই দেইনি।'
হস্তান্তর দূরের কথা, কাজ কবে শেষ হবে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান তাও বলতে না পারায় বিপাকে চিকিৎসক ও রোগীরা।
আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. মনজুরুল মোর্শেদ দোলন বলেন, 'জানুয়ারি মাসে তো উনারা প্ল্যান্ট তৈরিই করেনি, তাহলে উনারা কিভাবে সাপ্লাই দিচ্ছে। দুঃখজনক বিষয় হলো এতদিন ধরে কাজ চলছে কিন্তু উনাদের ফিনিশিং শেষ হয়নি। আমার তত্ত্বাবধায়ককে এখনো উনারা এসে বলেননি যে আগামী দিন থেকে আপনারা বুঝে নেন।'
করোনা রোগীর চিকিৎসায় শিগগিরই অক্সিজেন প্ল্যান্ট নির্মাণের দাবি লালমনিরহাটের সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায়ের। তিনি বলেন, 'আমাদের সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট না থাকার কারণে হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানেলা ব্যবহার করতে পারছি না। আমরা পেশেন্টকে অক্সিজেন দিতে পারছি না। দ্রুত এটা চালু হলে আমাদের জন্য সুবিধা হতো।'
জেলায় ভারতীয় ধরণ ছড়িয়ে পড়লে সংক্রমণের ভয়াবহতা আরো বাড়বে। তাই এখনই সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি করোনা মোকাবিলায় জরুরি ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জেলাবাসীর।