আজ ৮ই মার্চ, 'আন্তর্জাতিক নারী দিবস'। 'নারী-পুরুষের সমতা, টেকসই আগামীর মূল কথা' (Gender equality today for a sustainable tomorrow)—এই প্রতিপাদ্যে এ বছর আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপিত হতে যাচ্ছে।
হাজারো প্রতিকূলতা পেরিয়ে নারীর এগিয়ে যাওয়ার স্বীকৃতি দিতেই পালন হয় দিনটি। বর্তমান বাস্তবতায় দেশে, পরিবার ও সন্তানের দায়িত্ব সামলে ক্যারিয়ার টিকিয়ে রাখা নারীর পক্ষে অনেকটাই দুঃসাধ্য।
সেই সঙ্গে কর্মক্ষেত্রের সমস্যাও বহুমাত্রিক। এসব সংকটের মধ্য দিয়ে অনেকে টিকে থাকলেও অনেকেই আবার পারেননা। সন্তানের দেখভালে ত্যাগ স্বীকার করেন নিজের ক্যারিয়ারের সাথে।
নীতি নির্ধারনী পর্যায়ে এখন অনেকটা এগিয়েছে দেশের নারীরা। জিডিপিতেও আছে নারীর সন্মানজনক অবদান। তবে এপথ পাড়ি দিতে প্রতিনিয়ত ঘরে বাইরে যে সংগ্রাম করছে নারীরা, তার খবর কজনইবা রাখেন?
চলুন শুনি তানিয়া জাহানের সংগ্রামী জীবনের খানিকটা। মাত্র ২৭ বছরের জীবনে স্বামীকে হারালেও চাকরিটাই সমাজে টিকিয়ে রেখেছে এই একক মাকে।
সংবাদকর্মী তানিয়া জাহান বলেন, 'স্বামী চায়নি বলেই তখন আমি চাকরিটা ছেড়ে দেই। গর্ভকালীন ৯ মাসে আমার স্বামী এক দুর্ঘটনায় মারা যান। এরপর চাকরী করার একটা উদ্যোগ নেই। নিজের একটা পরিচয় গড়ে তুলতে, বাচ্চার ভবিষ্যৎ চিন্তা করেই আমি আবার চাকরি শুরু করি।‘
তানিয়া জাহান চাকরি ধরে রাখলেও তা পারেননি ইশরাত জাহান। ক্যারিয়ারের ভালো সুযোগ থাকলেও দুই সন্তানের দেখভালের প্রয়োজনে অনেক চেস্টার পরও ধরে রাখতে পারেননি একযুগেরও বেশি সময়ের ক্যারিয়ারকে।
গৃহিনী ইশরাত জাহান বলেন, 'পড়াশোনা শেষ করে আমি চাকরি শুরু করেছিলাম। বিয়ের পরও আমি চাকরি করি। ২য় বাচ্চা হবার পর আমাকে চাকরিটা ছেড়ে দিতে হয়। কারণ বাচ্চাদের দেখাশোনা করার মত কেউ নেই। উজ্জ্বল ক্যারিয়ার থাকা সত্ত্বেও আমি চাকরিটা ধরে রাখতে পারি নি।
নারীদের এগিয়ে নিতে কাজ করা সংস্থাগুলো বলছে, নারীর ভাগ্য উন্নয়ন আর তার এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে রাষ্ট্রকেই।
ফ্রেন্ডশীপের প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক রুনা খান বলেন, 'আশেপাশে যে দেশগুলো আছে তাদের যখন দেখা হয় তখন বুঝা যায় আমাদের নারীরা তাদের থেকে সেরা। আমাদের নারীদের মধ্যে সামনে এগিয়ে যাবার সেই উদ্যোমটা আছে। আমাদের উচিৎ এক সঙ্গে মিলে কাজ করার।‘
এই তিন নারীই বলছেন, কর্মক্ষেত্রে শিশু সন্তানদের দেখভাল করার ব্যবস্থা থাকলে অনেকটা নিশ্চিত হতে নারীর কর্মজীবন।