সংস্কৃতি, বিশেষ প্রতিবেদন

আসর বসছে না, সঙ্কটে গম্ভীরা শিল্পীরা

শামীম আহমেদ

ডিবিসি নিউজ

শুক্রবার ১৫ই অক্টোবর ২০২১ ০১:২১:১০ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী লোক সংগীতের অন্যতম ধারা গম্ভীরা গান। যার শুরু হাজার বছর আগে হলেও, বাংলাদেশে এটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে দেশভাগের পর। নানা-নাতির হাস্যরসের মধ্যদিয়ে খুব সহজেই সাধারণ মানুষকে আনন্দ দেয় গম্ভীরা গান। তবে আসর না বসায় সঙ্কটে পড়েছেন গম্ভীরা গানের শিল্পীরা। শিল্পকলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ বলছে, লোকজ এই ধারা টিকিয়ে রাখতে সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

গম্ভীরা গান, বাদ্যযন্ত্রের মাধ্যমে নানা-নাতির রম্য ও হাস্যরসে ভরা বিনোদন। এই গান দিয়ে দর্শকদের খুব সহজেই মুগ্ধ করা যায়। সাধারণত উন্নয়ন ও সচেতনতামূলক বিভিন্ন বার্তা থাকে গম্ভীরা গানে।

গম্ভীরা সমাজ পরিবর্তনেও ভূমিকা পালন করে আসছে। শিল্পীরা বলছেন, দীর্ঘদিন কোন আসর না হওয়ায় বিলুপ্তির পথে লোকজ এই সংগীত। বাধ্য হয়ে অনেকেই চলে যাচ্ছেন অন্য পেশায়।

একজন শিল্পী বলেন, মানুষকে সচেতন করার মূল অস্ত্র হলো এ গম্ভীরা। এর চেয়ে বোধহয় আর বড় কোন অস্ত্র পাওয়া যাবেনা মানুষকে সচেতন করতে।

আরো একজন গম্ভীরা শিল্পী জানান, আর্থিক যে অনটনের মধ্যে চলছেন গম্ভীরা শিল্পীরা অন্য লোকজ শিল্পীদের মতো, তাতে আগামীতে গম্ভীরার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখাই খুব কঠিন হবে।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মালদা থেকে এই জেলায় গম্ভীরা গান নিয়ে আসেন শফিউর রহমান শুফি মাস্টার। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জে নানা রকিবুল আলম ও নাতি কতুবুল আলমের হাত ধরেই মূলত দেশজুড়ে জনপ্রিয়তা পায় গম্ভীরা।

এক গম্ভীরা শিল্পী বলেন, নতুন প্রজন্ম এ গম্ভীরা গানে উৎসাহিত হচ্ছেনা। দিবসগুলোতে যদি এ গানের আয়োজন করা হয় তাহলে খুব ভালো হবে।

পৃষ্ঠপোষকতার অভাব ও শিল্পীরা কাজ করতে না পারায় অনেকাংশে বিলুপ্তির পথে এই সংগীত।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ উদীচী জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক মিথুন বলেন, সরকার যদি এটিকে টিকিয়ে রাখতে বিশেষ উদ্যোগ নেয় তাহলে এটা সম্ভব। এর পাশাপাশি আমাদের এই দলটাকে বিশ্বের অন্যান্য দেশে পাঠিয়ে গম্ভীরার প্রসারের জন্য আমি দাবি রাখছি।

গবেষক ও লেখক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মাযহারুল ইসলাম তরু জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের যে ভাষাটি আছে এটি গম্ভীরার জন্য প্রচলিত ভাষা। যখন এটি বিকৃত ভাষায় করা হয় তখন এটির মূল আকর্ষণ কমে যায়।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল কর্মকর্তা ফারুকুর রহমান ফয়সল জানান, এই লোক আঙ্গিকটির আয়োজন করোনাকালে কমে গেছে। গম্ভীরাকে টিকিয়ে রাখতে সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সরকার ও শিল্পকলা একাডেমি বেশ পৃষ্ঠপোষকতা করছে।

জেলার ৫টি উপজেলায় মোট ১৬টি গম্ভীরা দল রয়েছে।

আরও পড়ুন