কৌশলে ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ওটিপির মাধ্যমে প্রবাসীদের ইমো অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতো প্রতারক চক্র।
তারপর সেই অ্যাকাউন্ট থেকেই টার্গেট প্রবাসীর স্বজনদের জানানো হতো দুর্ঘটনার মতো জরুরি অবস্থার কথা। বিপদ থেকে উদ্ধারে বিকাশের মাধ্যমে স্বজনদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হতো টাকা।
এমনই এক প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। চক্রের সাথে আরো কেউ জড়িত কিনা খতিয়ে দেখছে গোয়েন্দা পুলিশ। প্রতারণা থেকে বাঁচতে প্রযুক্তির ব্যবহারে সতর্ক থাকারও পরামর্শ পুলিশের
রাজধানীর কাফরুল এলাকার থাকেন মনসুর রহমান। ২০২০ সালের ২৭শে ডিসেম্বর ইতালী প্রবাসী ছেলে রেজওয়ান কবির সাকিবের ইমো অ্যাকাউন্ট থেকে ফোন করে জানানো হয় তার ছেলেকে আটক করেছে পুলিশ। ছাড়িয়ে নিতে জরুরি ভিত্তিতে দেড় লাখ টাকা প্রয়োজন জানালে তা টাকা পাঠাতে কিছু সময় চান মনসুর রহমান।
এই সময়ে দেশ থেকে কয়েক দফা ছেলের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন তিনি। কারণ ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ডের মাধ্যমে ছেলে ইমো অ্যাকাউন্টের দখল নিয়েছে প্রতারকরা। কয়েকটি বিকাশ নম্বরে কয়েক ধাপে দেড় লাখ টাকা পাঠিয়ে দিলে ছেলের সাথে যোগাযোগ হয়।
ভুক্তভোগী মনসুর রহমান বলেন, 'যখন শুনেছি আমার ছেলেকে জেলে ঢুকাবে তখন এত কষ্ট লাগছে আমি বলে বোঝাতে পারবো না। দেড় লাখ মেনেজ করি এরপর তারা ৫টা বিকাশ নম্বর দেয় সেখানেই আমি ওই দেড় লাখ টাকা বিকাশ করি।'
মামলার তদন্তে নেমে নাটোরের লালপুর এলাকা থেকে ২১ টি সিম কার্ড, নয়টি মোবাইল ফোনসহ প্রতারক মাসুদ রানাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের উপ কমিশনার মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম বলেন, 'আপনি যদি প্রতারকের কাছে ম্যাসেজের ওটিপি দিয়ে দেন তখনই ইমোর কন্ট্রলটা চলে যাবে সম্পূর্ণ এ্যাপেসের আন্ডারে বা ওই প্রতারকের কাছে।'
মাসুদ রানা কয়েক বছর আগেও রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করলেও গত এক বছরের বেশি সময় ধরে মানুষের ইমো অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলো দাবি পুলিশের।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, ওই ব্যক্তি পাঁচটি বিকাশ নম্বরে দেড় লাখ টাকা পাঠিয়েছে। শুধু তাই নয় সুইজারল্যান্ডের এক প্রবাসীরও এ ঘটনা ঘটেছে। তারা যদি আপনাদের কাছে কোন ওটিপি বা পিন নম্বর চাই দিবেন না। এগুলো দিলেই আপনি প্রতারনার স্বীকার হবেন।
তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে যোগাযোগ ব্যবস্থা, আর্থিক খাতগুলোতে যুগান্তকারী সুফল বয়ে আনলেও একই সাথে এর অপব্যবহার করে প্রতারণার নানা কৌশলরপ্ত করছে অপরাধীরা।