জাতীয়, অপরাধ

ইয়াবা পরিবহণে ব্যবহার করা হচ্ছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী তঞ্চঙ্গ্যাদের

আকরাম হোসেন

ডিবিসি নিউজ

শুক্রবার ১২ই নভেম্বর ২০২১ ০৮:৩৫:০৭ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

নজরদারি এড়াতে এবার পার্বত্য চট্টগ্রামের দুর্গম সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার থেকে ইয়াবার বড় বড় চালান আনছে মাদক কারবারিরা। এরপর অর্থের বিনিময়ে ওই অঞ্চলে বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী-তঞ্চঙ্গ্যাদের মাধ্যমে ইয়াবা পৌঁছে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে।

সম্প্রতি ইয়াবাসহ এগারো তঞ্চঙ্গ্যাকে গ্রেপ্তারের পর এই তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। কর্মকর্তাদের দাবি, এর আগে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জনগোষ্ঠীকে মাদক কারবারে জড়িয়ে পড়তে দেখা যায়নি।

মিয়ানমারে উৎপাদন, ভোক্তা বাংলাদেশে। কয়েক যুগ ধরে সীমান্ত ঘেঁষা নাফ নদী পেরিয়ে ইয়াবার চালান ঢুকছে কক্সবাজারে। তারপর ছড়িয়ে পড়ছে সারাদেশে। তবে পরিচিত এই রুটের বাইরে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের দুর্গম সীমান্ত দিয়েও ঢুকছে ইয়াবার চোরাচালান। বাহক হিসেবে ব্যবহার করছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী-তঞ্চঙ্গ্যাদের।

সম্প্রতি গোয়েন্দা পুলিশের দু'টি অভিযানে ধরা পড়েছে দুই তঞ্চগ্যা পরিবারের এগারো সদস্য। পার্বত্যা চট্টগ্রাম থেকে ৬৯৪ কিলোমিটার দূরের ঠাকুরগাঁওয়ে সাড়ে ষোলো হাজার ইয়াবা বড়ির চালান পৌঁছে দেয়ার পথে রাজধানীতে ধরা পড়েন তারা। 

গোয়েন্দারা জানান, প্রতিটি ইয়াবা বড়ি পরিবহণের জন্য পনেরো টাকা করে পেতেন তঞ্চঙ্গ্যারা। সেই হিসেবে দু'টি চালান পৌঁছে দিতে পারলে পেতেন দুই লাখ সাতচল্লিশ হাজার পাঁচশো টাকা। কর্মকর্তারা বলছেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতেই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের দিয়ে ইয়াবা পরিবহণ শুরু হয়েছে। 

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের উপ কমিশনার এইচ এম আজিমুল হক বলেন, এর আগে আমরা মাদক পরিবহণের কাজে কখনো ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কাউকে পাইনি। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের মধ্যে যারা প্রভাবশালী তারা মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে। তারা যদি এভাবে ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে তাহলীটি নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে পড়বে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাড়াও মিয়ানমারেও বসবাস রয়েছে তঞ্চঙ্গ্যাদের। তাই মাদক গবেষকদের শঙ্কা, তারা ইয়াবা কারবারে জড়িয়ে পড়লে পার্বত্য অঞ্চলে নানা ধরনের জটিলতা ও মেরুকরণ তৈরি হতে পারে। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক তৌহিদুল হক বলেন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের মধ্যে যারা ইয়াবার বাহক হিসেবে কাজ করছে কিছুদিন পর তারা আর বাহক হিসেবে থাকবে না নিজেরাই ব্যবসা শুরু করবে। যেভাবে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীরা এই কাজে সম্পৃক্ত হচ্ছে তাহলে তাদেরকেই এই কেন্দ্রিক অপরাধ থেকে মুক্ত রাখতে পারবো না।

মাদকের বিস্তার ঠেকাতে সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি পর্দার আড়ালে থাকা বড় ব্যবসায়ীদেরও আইনের আওতায় আনার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

আরও পড়ুন