নারী, কৃষি

ওয়েবিনার: ‘পারিবারিক কৃষি ও কৃষিতে নারীর শ্রম’

শামীম আহমেদ

ডিবিসি নিউজ

বৃহঃস্পতিবার ১০ই ডিসেম্বর ২০২০ ০৬:১৯:১৯ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

‘পারিবারিক কৃষি ও নারী কৃষক: পেশা ও মর্যাদা’ শীর্ষক প্রচারাভিযান নিয়ে ‘পারিবারিক কৃষি ও কৃষিতে নারীর শ্রম’ শিরোনামে একটি ওয়েবিনার আয়োজিত হয়েছে।

সোমবার (৭ ডিসেম্বর), অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ ও ২৪ ঘন্টা সম্প্রচারভিত্তিক টেলিভিশন সংবাদ চ্যানেল ডিবিসি নিউজ-এর যৌথ উদ্যোগে ওয়েবিনারটি আয়োজন করা হয়। নারী কৃষকের অধিকার, পারিবারিক কৃষি ও জলবায়ু সহনশীল টেকসই কৃষি নিয়ে অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় সাংবাদিক শায়লা দীনার সঞ্চালনায় এই ওয়েবিনারে অংশ নেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ড. শ্রী বীরেন শিকদার এমপি, অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির, সাবেক কৃষি সচিব আনোয়ার ফারুক, সার্ক কৃষি কেন্দ্রের পরিচালক ড. মিয়া সাঈদ হাসান, অ্যাকশনএইড ইন্টারন্যাশনালের সাউথ এশিয়া অ্যাডভোকেসি কোঅর্ডিনেটর হেলাল উদ্দিন এবং বিন্দু নারী উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি জান্নাতুল মাওয়া। এছাড়াও গাইবান্ধা থেকে যোগ হন উজ্জ্বল উপহার নারী দলের সদস্য ও প্রকল্প অংশীদার লাকি বেগম।

আলোচনায় কৃষি উৎপাদনে নারীর শ্রম, অবদান ও স্বীকৃতির পাশাপাশি পারিবারিক কৃষিতে নারী কৃষকের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়। পাশাপাশি উঠে আসে বীজের অধিকার নিশ্চিত করতে নারী কৃষকদের ভূমিকার কথা। এছাড়াও অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় পারিবারিক কৃষি নিয়ে আরও ভবিষ্যতমুখী উদ্যোগ নেওয়ার ক্ষেত্রগুলোর প্রসঙ্গেও আলোচনা হয়।

আলোচনায় অ্যাকশনএইড ইন্টারন্যাশনালের সাউথ এশিয়া অ্যাডভোকেসি কোঅর্ডিনেটর হেলাল উদ্দিন বলেন, 'যদিও বিশ্বের অনেক দেশের মত বাংলাদেশের কৃষিও প্রায় ৮০ ভাগ নারীর সক্রিয় অবদান আছে, তবুও এখনো তাদেরকে কৃষক হিসেবে পুরুষের পাশাপাশি সমান স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি।

নিজের আলোচনায় নারী কৃষকদের পারিশ্রমিক বৈষম্য, কৃষি উন্নয়ন পরিকল্পনাতে নারীদের স্বল্প অন্তর্ভূক্তি এবং কৃষিতে নারী বান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোকপাত করেন সাবেক কৃষি সচিব আনোয়ার ফারুক।

এছাড়া অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ- এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, 'আমাদের কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতায় কিছু উদ্যোগ রয়েছে, কিন্তু সেগুলো তৃণমূলের নারী কৃষকদের কাছে সমানভাবে পৌঁছাচ্ছে না। তিনি সরকারের কাছে আরো অনুরোধ করেন নারীদের জন্য বিশেষায়িত কৃষি গবেষণামূলক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে।

বিন্দু নারী উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি জান্নাতুল মাওয়া বলেন, 'যেহেতু কৃষিতে নারীদের অবদানকে সরকারিভাবে এখনও স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি, এজন্য কৃষক হিসেবে তারা ব্যাংক থেকে ঋণ সুবিধা পাচ্ছেন না।

গাইবান্ধার কঞ্চিপাড়ার উজ্জ্বল উপহার নারী দলের সদস্য লাকি বেগম বলেন, 'বীজ বোনা থেকে ধান কাটা ও বীজ সংরক্ষণ পর্যন্ত কৃষি উৎপাদনের সকল ধাপেই নারীরা ওতোপ্রোতভাবে জড়িত থাকেন। কিন্তু বিক্রির সময় শ্রমের ন্যায্য মূল্য তারা পান না।'

এদিকে সার্ক কৃষি কেন্দ্রের পরিচালক ড. মিয়া সাঈদ খোকন জানান, 'পৃথিবীতে প্রায় ৮০ ভাগ খাদ্য উৎপাদন হয় পারিবারিক কৃষির মাধ্যমে। যে কারণে জাতিসংঘ ২০১৯ থেকে ২০২৮ এই দশ বছরকে পারিবারিক কৃষি দশক হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে।'

আর প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক প্রতিমন্ত্রী ড. শ্রী বীরেন শিকদার এমপি বলেন, 'কৃষিক্ষেত্রে নারীদের ভূমিকা অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই।' কৃষিতে নারীদের অংশগ্রহণের সুযোগ আরো বৃদ্ধি করতে সরকার নারীদের জন্য বিশেষায়িত কৃষি শিক্ষা প্রতিষ্টান প্রতিষ্ঠাসহ অন্যান্য যুগোপযোগী পদক্ষেপ নিবেন বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

আরও পড়ুন