কবি ও নারী আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ সুফিয়া কামাল। ১৯১১ সালে বরিশালের নবাব পরিবারে জন্ম তার।
জীবনে অনেক ঘাত-প্রতিঘাতেও তিনি ছিলেন অবিচল। নারী জাগরণে রেখেছেন অগ্রণী ভূমিকা। ১৯৯৯ সালের আজকের এই দিনে (২০শে নভেম্বর) মারা যান তিনি। সুফিয়া কামাল প্রথম নারী, যাকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়।
কবি সুফিয়া কামালের জন্ম বিশশতাব্দির গোড়ার দিকে। যে সময়টা ঘরবন্দী ছিল বাংলার নারীরা। বঞ্চিত ছিল শিক্ষার আলো থেকে। রক্ষণশীল পরিবারে জন্ম নেয়া সুফিয়া কামালও পাননি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা।
তবে পারিবারিক পরিবেশে তার শিক্ষার হাতেখড়ি হয়। মা সাবেরা বেগমের কাছে পান বাংলা শিক্ষা। মাত্র ১২ বছরে বিয়ে হওয়ায় তারও সমাপ্তি ঘটে। স্বামী সৈয়দ নেহাল হোসেনের উদারতায় পেয়েছেন সাহিত্য চর্চার সুযোগ। নতুন রূপে নিজেকে খোঁজে পান সুফিয়া। বিয়ের বছরেই লিখেন তার প্রথম গল্প 'সৈনিক বধু'।
১৯২৬ সালে তার প্রথম কবিতা ‘বাসন্তী’ প্রকাশিত হয়। হয়ে উঠেন আলোচিত কবি। সান্নিধ্য পান বাংলা সাহিত্যের নক্ষত্র রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম ও শরৎ চন্দ্রের। এমনকি তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ সাজের মায়ার মুখবন্ধও লিখেছিলেন বিদ্রোহী কবি।
দেশভাগের পর ঢাকায় স্থায়ী হন সুফিয়া কামাল। অংশ নেন ভাষা আন্দোলনে। প্রতিষ্ঠা করেন কচিকাঁচার মেলা। রবন্দ্রী সঙ্গীত বর্জন ঘোষণার প্রতিবাদে ভূমিকা রেখেছেন, অংশ নেন ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে। নারী জাগরণের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠা করেন মহিলা পরিষদ।
সাঁঝের মায়া, মায়া কাজল, মন ও জীবন, শান্তি ও প্রার্থনাসহ বেশ কিছু পাঠক নন্দিত কাব্যগ্রন্থ আছে বাংলা নারী জাগরণের অগ্রণী এই যোদ্ধার।