ধর্ম, জাতীয়

করোনাভাইরাস: মসজিদে জামাতে নামাজ আদায়ে অনড় ইমামরা

আকরাম হোসেন

ডিবিসি নিউজ

মঙ্গলবার ৩১শে মার্চ ২০২০ ০৮:২৯:২৪ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

দুর্যোগের সময় মসজিদে নামাজ আদায় বন্ধের নির্দেশনা রয়েছে ধর্মেই।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে মসজিদে জামাতে নামাজ আদায়ের পক্ষে অনড় ইমামরা। জাতীয় ইমাম সমাজের সাধারণ সম্পাদক মিনহাজ উদ্দিন বলছেন, সামনের দিনে ছোঁয়াচে ভাইরাসটি মহামারী রূপ নিলেও বিশেষ ব্যবস্থায় সচল থাকবে জামাত। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজের অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউসুফ বলছেন, দুর্যোগের সময় মসজিদে নামাজ আদায় বন্ধের নির্দেশনা রয়েছে ধর্মেই।

করোনাভাইরাসের কারণে ঘরে নামাজ আদায়ে সরকারের অনুরোধের পরও সারাদেশে মসজিদে মুসল্লিদের ভিড়। জুমার নামাজে এই ভিড় বাড়ে আরও।

করোনার বিস্তার ঠেকাতে অবস্থানগত দূরত্ব নিশ্চিতের কোনো বিকল্প নেই। একারণেই ছাব্বিশে মার্চ থেকে সাধারণ ছুটির আবরণে সারাদেশ কার্যত অবরুদ্ধ। নিষিদ্ধ গণপরিবহণ চলাচল। বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সবাইকে ঘরে থাকতে বলা হয়েছে। কিন্তু মসজিদে জনসমাগমের কারণে অত্যন্ত ছোঁয়াচে এই ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।

ঢাকার ঐতিহ্যবাহী চকবাজার শাহী জামে মসজিদের ইমাম এবং জাতীয় ইমাম সমাজের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন বলেন, কোনো পরিস্থিতিতেই মসজিদে নামাজ বন্ধের সুযোগ নেই। তিনি বলেন, ইসলামের ইতিহাসে জামাতে নামাজ বন্ধ করা কোরান ও হাদিসে পাওয়া যায় না। এমন পরিস্থিতে আল্লাহ আমাদের পরীক্ষা করেন। বেশি সমস্যা হলে আমরা মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন এবং এলাকার যুবক মুসল্লিদের নিয়ে মসজিদেরি কোয়ারেন্টিনে থাকবো। এদের নিয়ে জামাত করে এটি চালু রাখবো।

তবে ভিন্নমত জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, বিশেষ পরিস্থিতিতে মসজিদে নামাজ বন্ধের নির্দেশনা রয়েছে ধর্মেই।

তিনি বলেন, একবার এক প্রবল বৃষ্টির দিনে আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) তার মুয়াজ্জিনকে বলেছেন আজানে হাইয়ূআলাস সালা না বলে সাল্লু ফি ব্যয়ূতিকুম এর মানে হচ্ছে তোমরা তোমাদের নামাজ বাসায় পড়ো। আরেকটি হাদিসে আছে কোন অসুস্থ ব্যক্তি যাতে সুস্থ ব্যক্তির কাছে না আসে। তাই কোন ব্যক্তি যদি করোনায় আক্রান্ত থাকে কিন্তু সে না জানে তখন তার কাছ থেকে অন্য মানুষও সংক্রমন হতে পারে। এর দায় কিন্তু আলেমদের উপরও পড়ে কারণ তারা তাদের সতর্ক করেনি। এসব হাদিসের বয়ান দিয়ে কিন্তু আমরা এখন জামাত আদায় বন্ধ রাখতে পারি।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আলেম-ওলেমা ও ইমামদের মতামতের ভিত্তিতে, এখন থেকে মসজিদে শুধু ফরজ নামাজ চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। সুন্নাত নামাজ পড়তে হবে ঘরে। পাশাপাশি অসুস্থ, পঞ্চাশোর্ধ্ব ও বিদেশফেরত ব্যক্তিদের মসজিদে না  যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ বলেন, যাদের জ্বর, সর্দি, কাশি রয়েছে, যারা করোনা আক্রান্ত দেশ থেকে এসেছেন, এছাড়া বয়স্ক যারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত বা যাদের এই রোগে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে তাদের মসজিদে না আসাটাই উত্তম।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামিক স্টাডিজ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, রাস্তার পাশে এবং বাজারে যেসব মসজিদ আছে সেগুলোতে কিন্তু সব ধরণের মানুষ এসে থাকে। সেগুলো কিন্তু নিয়ন্ত্রন করা কষ্টকর।

সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা মোটেই সহজ হবে না, মানছে সবপক্ষই।

আরও পড়ুন