জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরে কোয়ারেন্টিন করা প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেস থেকে দুইটি উড়োজাহাজে করে মার্কিন নাগরিকদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে। সোমবার ভোররাতে টোকিওর হ্যানেডা বিমানবন্দর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের পাঠানো বিমান ছেড়ে যায় বলে জানায় কিওডো নিউজ এজেন্সি।
চীনে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হবার কারণে জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরে গত ৩রা ফেব্রুয়ারি থেকে আটকে আছে ডায়মন্ড প্রিন্সেস।জাহাজটিতে ৩৫৫ জনেরও বেশি লোকের করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিশ্চিত করা হয়েছে। চীনের বাইরে একক কোন জায়গায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে এই জাহাজেই।
ডায়মন্ড প্রিন্সেস জাহাজে প্রায় ৪০০ মার্কিন যাত্রী ছিলেন, এদের মধ্যে অন্তত ৪০জনের করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঘটেছে। তাদের চিকিৎসা জাপানেই হবে।
ডায়মন্ড প্রিন্সেস জাহাজটিকে প্রায় ৩,৭০০ যাত্রী নিয়ে ইয়োকোহামা বন্দরে কোয়ারেন্টিন করা হয়।
জাহাজের একজন যাত্রী হংকং এ নেমে যাবার পর তার করোনাভাইরাস শনাক্ত হলে ডায়মন্ড প্রিন্সেস জাহাজটিকে আটক করা হয়। এরপর থেকে জাহাজের যাত্রীদের মধ্যে প্রবল ভীতি ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দৈনন্দিন জীবনযাপনে সতর্কতা অবলম্বন করা শুরু হয়।
যাত্রীদের নিজ নিজ কেবিনে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়। খাবার ঘরে পৌঁছে দেয়া হতে থাকে। যারা ঘরে খাবার নিয়ে যাবে তারা মুখোশ, গ্লাভস, প্লাস্টিকের এ্যাপ্রন ইত্যাদি পরে এ কাজ করেছেন।
এছাড়া জাহাজের বাইরে ৫০টি অ্যামবুলেন্স প্রস্তুত রাখা হয় জরুরী ভিত্তিতে রোগী হাসপাতালে পৌঁছানোর জন্য।
জাপানের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজের পরিচালক ডা. অ্যান্থনি ফাউসি বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমিত হওয়া মার্কিন নাগরিকদের জাপানে চিকিৎসা করা হবে।
তবে যারা বিমানে করে যুক্তরাষ্ট্র ফিরে গেছেন, তাদের মধ্যে কেই সংক্রমিত হয়েছেন কিনা তা পরিষ্কার নয়।
ডা. ফাউসি বলেন, "তবে বিমানে থাকা কারো মধ্যে যদি আক্রান্ত হবার লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা দেয়, তাহলে বিমানের মধ্যেই তাকে আলাদা করে ফেলতে হবে। "
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের পর এই যাত্রীদের প্রত্যেককে ১৪দিন কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে।
তবে জাহাজে থাকা কিছু যাত্রী মার্কিন সরকারের পাঠানো বিমানে ফেরত যেতে রাজি হননি। তারা ১৯শে ফেব্রুয়ারি জাহাজের সবার কোয়ারেন্টিনে থাকা সময়সীমা শেষ হলে একসঙ্গে ফিরতে চান।
যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও নিজ নিজ দেশের নাগরিকদের সরিয়ে নেবার জন্য ইসরায়েল, হংকং এবং কানাডার চার্টার্ড বিমান পাঠাচ্ছে।
এদিকে, জাহাজে আটকে পড়া যাত্রীদের কিছুটা স্বস্তি দেবার অংশ হিসেবে জাপান সরকার ২,০০০টি আইফোন উপহার দিয়েছে, মানে প্রতি কেবিনের জন্য একটি হিসেব করে। যাত্রীদের জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বানানো অ্যাপ ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়েছে, যেখানে ব্যবহারকারীর সঙ্গে চিকিৎসক, ফার্মাসিস্ট, মনোবিদের সংযোগ স্থাপন করে দেয়া আছে।
তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা