চাকরি, রাজধানী

করোনার কারণে বেকার রাজধানীর ৫ লাখ বাবুর্চি

শামীম আহমেদ

ডিবিসি নিউজ

শুক্রবার ৩রা জুলাই ২০২০ ০৯:৫৭:০৫ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

সুস্বাদু খাবারের কারিগর বাবুর্চিদের ঘরেই এখন খাবার নিয়ে টানাটানি। করোনা সংক্রমণের কারণে সামাজিক ও ঘরোয়া আয়োজন বন্ধ থাকায় ৪ মাস ধরে বেকার তারা। রাজধানীর বিভিন্ন হোটেল-রেস্টুরেন্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও ডেকোরেটরের সঙ্গে জড়িত ৫ লাখের বেশি বাবুর্চির অনেকেই অন্যকিছু করে সংসার চালানোর চেষ্টা করছেন।

বয়সের ভারে নুইয়ে পড়া শরীর। সংসারের ভার টানতে টানতে ক্লান্ত শরীরে বাসা বেধেছে নানা অসুখ। তারপরও জীবনযুদ্ধে একমুহূর্ত থামার উপায় নেই মো আবুল কালাম বাবুর্চির। করোনা মহামারি যেন পুড়ে যাওয়া কয়লার মতো তার জীবন-জীবিকাকেও অঙ্গার করে তুলেছে।

তিনি বলেন, 'আমরা রাইন্ধা-বাইড়া খাওয়াই, আর এখন আমরা না খাইয়া কষ্ট করতেসি। তার মাঝে ১০ পয়সার ইনকাম নাই. তাহলে ভিক্ষা ছাড়া আমাদের উপায় নাই।'

ধুলোজমা এই পাতিলের সঙ্গে যাদের জীবন জড়িয়ে আছে করোনা মহামারিতে রান্নার সেই কারিগরদের কপালেও জমেছে অনিশ্চিয়তার কালো মেঘ। এতদিন যারা সুস্বাদু খাবার রান্না করতো কাজ হারিয়ে আজ তাদের ঘরই খাবারশূণ্য।

সীমিত আকারে দোকান পাট-অফিস খুললেও বন্ধ কমিউনিটি সেন্টার, ডেকোরেটর, হোটেল-রেস্টুরেন্ট। ঘরোয়া বা সামাজিক আয়োজন নেই। তাই ৪ মাস ধরে বন্ধ বাবুর্চিদের কাজ।

একজন ডেকোরেটর প্রতিষ্ঠানের মালিক বলেন, 'মিলাদ-মাহফিল, বিয়ে-শাদি যা কিছু হয় সবই পুরো বন্ধ। ফ্যামিলি চালাতে গেলে দেখা যাবে আমাকে মালপত্র বিক্রি করে ফেলতে হবে। এই অনুষ্ঠানগুলো যদি কিছুটা খুলে দেয় তাহলে আমরা চলতে পারবো।'

জামাল বাবুর্চি, ১০ বছর ধরে কাজ করছেন রাজধানীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে। তবে, জীবনের তাগিদে শেষমেশ রিকশার প্যাডেলই এখন তার সঙ্গী। তিনি বলেন, 'বর্তমানে করোনাভাইরাসের কারণে পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় রোডে নামতে হইসে।'

বাবুর্চিদের কোনো সংগঠন না থাকলেও তারা বলছেন, রাজধানীতে প্রায় ৫ লাখ রান্নার কারিগরের পরিবারে চলছে হাহাকার। আরও এক বাবুর্চি জানান, এখন তো কাম-কাজ নাই তাই আলু-পেঁয়াজ বিক্রি করে চলতে হয়। বাবুর্চি-প্যান্ডেল কারিগর মিলিয়ে ঢাকা শহরে ৫ লাখ হবে।'

করোনার এই আঁধার হয়তো কাটবে একদিন। সে পর্যন্ত টিকে থাকার যুদ্ধটা কতক্ষণ চালিয়ে যেতে পারবেন তারা, ঝাপসা চোখ খুঁজে ফিরছে এই প্রশ্নের উত্তর।

আরও পড়ুন