আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় নওগাঁর মহাদেবপুরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কলা চাষ।
মহাদেবপুর উপজেলার অর্থকারী ফসল হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে কলা। আর এ কলা চাষে ভাগ্য বদল হচ্ছে চাষীদের। যেখানে অন্যান্য ফসল করে লাভবান হতে পারছে না স্থানীয় চাষীরা; সেখানে কলা চাষ সফলতার হাসি এনেছে এ উপজেলার চাষীদের মুখে। ফলে দিন দিন বাড়ছে কলা বাগানের সংখ্যা। সম্পৃক্ত হচ্ছেন নতুন নতুন চাষী।
একরের পর একর কলা বাগান করে বছর শেষে মোটা অংকের টাকা উপার্জন করতে পারায় স্থানীয় অনেক যুবক পেশাও বদলাচ্ছেন। অন্য পেশা ছেড়ে আসছেন কলা চাষে। গত বছর কলার দামে খুশি না হলেও এবার কলার দামে চাষী-ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটেছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ২২০ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিক ভাবে কলা চাষ হয়েছে। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিস্তৃত জমিতে কলার বাগান। পরিচর্যায় ব্যস্ত বাগানের মালিক-শ্রমিকরা।
কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, অন্য যে কোন ফসলের চেয়ে অনেক বেশি লাভ হয় কলা চাষে। ফলে অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি এখন কলা চাষ হচ্ছে। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মানিক, চিনিচাম্পা, চাঁপা, অনুপম, মেহের সাগরসহ বিভিন্ন জাতের কলা চাষ করা হচ্ছে। এসব জাতের কলাগাছ থেকে অল্প দিনেই ফল পাওয়া যায়।
এক বিঘা জমিতে কলা চাষ করতে ১৫-২০ হাজার টাকা খরচ পড়লেও প্রতিবিঘা জমি থেকে কলা বিক্রি হয় ৭০-৮০ হাজার টাকা। যা অন্য কোন ফসলে সম্ভব নয়। তাছাড়া কলা বিক্রিতে কোন ঝামেলা হয় না। পাইকাররা জমি থেকেই কলা কেটে নিয়ে যায়।
উপজেলার সফাপুর গ্রামের কৃষক কালাম বলেন, ‘কলা চাষে লাভের পাল্লাই ভারি থাকে। প্রতিবিঘা জমিতে সাড়ে ৩শ’ থেকে ৪শ’ কলাগাছ লাগানো যায়। গাছ লাগানো থেকে শুরু করে ১১ মাসের মধ্যে কলা কর্তন করা যায়। এর মধ্যে কলা পাওয়া যায় ৩০০-৩২০টি গাছে। নানা কারণে বাঁকি গাছগুলো জমিতে টিকে থাকে না। বর্তমানে এক কাধি কলা উৎপাদন করতে আমাদের প্রায় ৯০-১০০ টাকা খরচ হয়।
উপজেলার শিবগঞ্জ গ্রামের কলা চাষী কুদ্দুস বলেন, ‘গড়ে এক বিঘা জমিতে ৭০-৭৫ হাজার টাকার কলা বিক্রি করা যায়। খরচ বাদে লাভ থাকে বিঘা প্রতি ৩৫-৪০ হাজার টাকা।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায় বলেন, উপজেলায় দিন দিন কলা চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। খরচের তুলনায় লাভ বেশি হওয়ায় চাষীরা কলা চাষ করছেন। কলা চাষে কৃষি বিভাগ চাষীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন।