অর্থনীতি

কোভিড-১৯ এর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা ও প্রাসঙ্গিক বিষয়ে বিআইবিএম এর জুম সেশন

আকরাম হোসেন

ডিবিসি নিউজ

রবিবার ৯ই আগস্ট ২০২০ ০১:২০:২০ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

সরকারের রাজস্ব নীতি ও মুদ্রানীতি এর মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে কোভিড-১৯ এর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা ও প্রাসঙ্গিক বিষয়ে জুম সেশনের আয়োজন করা হয়।

শনিবার, বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট এর এমবিএম অ্যালামনাই এর উদ্যোগে এই আলোচনায় মডারেটরের দায়িত্ব পালন করেন বিআইবিএম এর ফ্যাকাল্টি অন্তরা জেরিন। 

উক্ত সেশনে ডক্টর আহসান মন্সুর লিগ্যাসি প্রবলেম বিষয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, বাজেটে প্রাক্কলন অনুযায়ী রেভিনিউ অর্জিত না হওয়ায় পরবর্তী বাজেটে ডেফিসিট বাড়ছে। এছাড়া রাজস্ব খাতে জিডিপি কমেছে। সরকার ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণ নিলে মানিটারি পলিসির সাথে সাংঘর্ষিক হতে পারে বলেও তিনি সতর্ক করেন। এতে ক্রাউডিং আউটের সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে বলে তিনি আশংকা প্রকাশ করেন।

তিনি আরও বলেন, রেমিট্যান্স প্রবাহ ভাল হওয়ায় ডিপোজিটের গ্রোথ কিছুটা বাড়লেও বন্যার কারণে ফুড ইনফ্লেসনের একটি আশংকা কিছুটা রয়েছে যেখানে মনিটরি পলিসি কার্যকর হবে না। সর্বোপরি তিনি চারটি বিষয়ে আবারও মনে করিয়ে দেন। সেগুলো হলো, ১। পলিসিকে বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রোডাক্টিভ খাতে প্রতিফলন থাকতে হবে। ২। যারা চাকরি হারাচ্ছেন তাদের নিয়ে পলিসি থাকতে হবে। ৩। ফাইনান্সিয়াল সেক্টর চ্যালেঞ্জ তথা স্টিমুলাস প্যাকেজ, সরকারের বাজেট এবং স্বাভাবিক ঋণ প্রবাহকে অব্যাহত রাখার চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে হবে। ৪। ম্যাসিভ এক্সপানসন হবে যখন ইকোনমি রিকভার করবে। তার জন্য এখন থেকেই পরিকল্পনা রাখতে হবে।

কোভিড-১৯ এর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা বিষয়ে ডক্টর মোহাম্মদ তারেক বলেন, কোভিড-১৯ কতো দিন থাকবে কিংবা এটার সমাধান কি হবে তা নিয়ে গোটা পৃথিবী এখনো সন্দিহান তাই কোন পলিসি করা অত্যন্ত কঠিন। তিনি অর্থমন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংককে এজন্য ধন্যবাদ জানান। রেভিনিউ আর্নিং এর উপরে গুরুত্বারোপ করেন। একটি রেভিনিউ কমিশন গঠনের উপরে জোর দেন। এ সময় তিনি মানিটরি ও ফিসক্যাল পলিসি এর মধ্যে সার্বক্ষণিক মোনিটরিং এর কথা বলেন।

সেশনে জনাব মঞ্জুর হোসেন বলেন, ক্রাইসিস শুরু হয়েছে সাপ্লাই সাইড থেকে। ডিমান্ড তৈরির মাধ্যমে এই সমস্যাকে পুরোপুরি সমাধান করা সম্ভব নয়। ডিমান্ড ম্যানেজমেন্ট নিয়ে তিনি বলেন যে, সারভাইভাল স্ট্র্যাটেজি হওয়া উচত। যারা চাকরি হারিয়েছে তাদের কিংবা যাদের ইনকাম কমে যাচ্ছে তাদের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। স্টিমুলাস প্যাকেজের পাশাপাশি কিছু অ্যাডিসনাল পলিসির কথা বলেন যাতে স্টিমুলাস প্যাকেজ বাস্তবায়ন করা যায়। এনজিওগুলোর ক্রেডিট মার্জিন বাড়ানোর মাধ্যমে কিছুটা সহায়তা হতে পারে। তিনি একটি সম্ভাবনার কথা বলেন যে, এক্সচেঞ্জ রেটের ক্ষেত্রে বড় ধরণের কোন পরিবর্তন আসতে পারে, বিশেষ করে যখন ইকোনমি রিকভার করবে। চায়না ও ইন্ডিয়াতে এই পরিবর্তন ইতিমধ্যেই দৃশ্যমান। গার্মেন্ট সেক্টর ক্ষতি পুষিয়ে নিতে শুরু করেছে। কাজেই এক্সচেঞ্জে রেটে পরিবর্তন আসবে।

এছাড়া জনাব মামুন রশিদ বলেন, জুলাই মাসে রপ্তানি বেড়েছে। রপ্তানি ক্ষেত্রে শুধু তৈরি পোশাক খাত নয় বরং অন্যান্য খাতেও রপ্তানি বেড়েছে। পাশাপাশি নন-ফুড ইনফ্লেশন কিছুটা বেড়েছে এবং সামনে আরো বাড়তে পারে বলে তিনি আশংকা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, মহামারীর কারণে বাইরের দেশে বেশ কিছু ব্যাংকও ইতোমধ্যে দেউলিয়া হয়ে যাওয়ায় আমাদের ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডের ক্ষেত্রে ঝুঁকি বাড়ছে। এক্ষেত্রে রিসিভেবল ইন্সুরেন্সসহ বেশ কিছু ইন্ট্রুমেন্ট এর কথা বলেন যা দিয়ে এই ঝুঁকি কমানো সম্ভব। আমদানীর মতো রপ্তানির ক্ষেত্রেও মূল্য পরিশোধে দায়বদ্ধতার কথা বলেন তিনি। এ সময় তিনি ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডের ক্ষেত্রে আমাদের দেশের কনট্র্যাক্টগুলোকে চায়না কিংবা ভিয়েতনামের মতো শক্তিশালী করার উপরে জোর দেন।

উক্ত সেশনে সবশেষে ডঃ তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে মানিটরি পলিসি ঐতিহাসিকভাবেই ফিসক্যাল পলিসির সাপোর্ট হিসেবে কাজ করে আসছে। সেন্ট্রাল ব্যাংক তাই ব্যাংকিং সুপারভিসনের ক্ষেত্রেই বেশি কাজ করে আসছে। মানিটাইজেসন অব ফিসক্যাল মিজার্স বিষয়ে অন্য বক্তাদের সাথে একমত পোষণ করেন।

অনুষ্ঠানের শেষের দিকে ছিল একটি প্রশ্ন-উত্তর পর্ব যেখানে কমেন্টের মাধ্যমে দর্শকদের করা প্রশ্নগুলোকে অতিথিরা উত্তর দেন।

আরও পড়ুন