শীর্ষ নেতাদের নিষ্ক্রিয়তায় দীর্ঘায়িত হচ্ছে খালেদার কারাবাস, অভিযোগ মানতে নারাজ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
খালেদা জিয়ার কারাবাস দীর্ঘায়িত হওয়ার পেছনে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ে নেতৃত্ব আর সাংগঠনিক দুর্বলতাকে দায়ী করছেন তৃণমূলের নেতারা। দাবি, তৃণমূল প্রস্তুত থাকেলও সঠিক দিকনির্দেশনা ও রাজপথে কার্যকর আন্দোলন গড়ে না ওঠায় ২ বছরেও মুক্তি মেলেনি খালেদা জিয়ার। তবে অভিযোগ মানতে নারাজ কেন্দ্রীয় নেতারা। বলছেন, দলীয় প্রধানকে মুক্ত করতে সবই করেছেন তারা।
গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরাতন কারাগার। দূরত্বের হিসেবে খুবই সামান্য। কিন্তু এতিমের অর্থ আত্মসাৎ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে যাওয়ার পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া পার করেছেন দুই বছর।
দলীয় প্রধানকে মুক্ত করতে আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি রাজপথে আন্দোলনের এমন ঘোষণা কাজ না হওয়ার জন্য শীর্ষ নেতৃত্বকেই কাঠড়গায় দাঁড় করাচ্ছেন তৃণমূল।
তারা বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া আজ দুই বছর কারাগারে বন্দী, কিন্তু আমাদের আঙ্গুল কেটে দু’ফোটা রক্ত বের হয়নি। তাহলে নেতারা কীভাবে আশা করেন আন্দোলনের মাধ্যমে তাকে কারাগার থেকে মুক্ত করবেন। মহানগরের বর্তমান কমিটি এবং নির্বাহী কমিটি নেত্রীকে কারাগার থেকে মুক্ত করার আন্দোলনে ব্যর্থ হয়েছে। স্থায়ী কমিটিও ব্যর্থ। এদের পরিবর্তন করা দরকার। তৃণমূল প্রস্তুত আছে আন্দোলনের জন্য, শুধু যোগ্য নেতৃত্বের জন্য আমরা নামতে পারছি না।
অসুস্থতার কারনে গেল বছরের পয়লা এপ্রিল থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্বিবদ্যালয়ে আছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন। মুক্তিতে বিশেষ আবেদনের কথা বলেছন পরিবার।
আন্দোলনে ব্যর্থতা অন্যদিকে প্যারোলে মুক্তিতে দলের শীর্ষ নেতাদের অনীহার সমালোচনা করলেন বিএনপির আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। তিনি বলেন, আমি নেত্রীর প্যারোলে মুক্তির কথা বলেছিলাম কিন্তু এটিকে দল থেকে হেয়ভাবে দেখা হয়েছে।প্যারোল কোন দয়া না এটি তার সাংবিধানিক অধিকার। আরও কিছু আইনগত টার্ম আছে যাতে করেও তাকে মুক্ত করা যায়। কিন্তু দলের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দের কেন অনীহা তাকে মুক্ত করতে এটি তারাই ভালো জানে।
দলটির নেতারা বলেছন তারা ব্যর্থ নন। দলীয় প্রধানের মুক্তির জন্য সব চেষ্টাই করেছন তারা। পরিবার বিশেষ ব্যবস্থায় আবেদন করলে দলের আপত্তি থাকবে না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, আমি কোন ব্যর্থতা দেখছিনা। এরকম দুঃশাসনের মধ্যে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। আরও অনেক রক্ত বইবে, তারপরই হয়ত তিনি মুক্তি পাবেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি এই প্রক্রিয়ায়, কিন্তু আমরা থেমে নেই। আমরা অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছি। যতক্ষন না দেশনেত্রী খালেদা জিয়া মুক্তি না পায়,ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাবো।
তারপরেও আশা সময়মতোই আন্দোলন মাঠে গড়াবে এবং মুক্তি মিলবে খালেদা জিয়ার।