রণেশ ঠাকুরের গানের ঘরে অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে আয়োজন করা হয় 'সলিডারিটি কনসার্ট ফর রণেশ ঠাকুর'।
শনিবার (৩০শে মে) রাতে, লাইভ এই আয়োজনে সংহতি প্রকাশ করে গান গাইতে আসেন জলের গান'র শিল্পী রাহুল আনন্দ। 'আমি কোনো প্রতিবাদ করবো না, আমি কোনো বিচার চাইবো না'- এমনটি বলে কথা শুরু করেন দেশের জনপ্রিয় এই শিল্পী। তবে ব্যতিক্রমী এক প্রতিবাদের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সকল দর্শকদের আবেগতাড়িত করে তুলেন রাহুল আনন্দ। কথা শেষে গাইতে গাইতে নিজের মুখে কালি মেখে দেন তিনি। ছিঁড়ে ফেলেন তার ছবি আঁকার খাতার পাতা। অনুষ্ঠানে অন্যান্য শিল্পীদেরও ছুঁয়ে যায় রাহুলের এই প্রতিবাদ।
সংক্ষিপ্ত ভূমিকার পর নিজের গান শুরু করেন রাহুল আনন্দ। 'মুনিয়া জানেরে তোর মনেরেই বেদন, অই তন্ত্রমন্ত্রে পাই না তোরে, আমার ঘরে কে দিলো আগুন'- এমন কথায় গানটি পরিবেশনের সময় রাহুলের প্রতিবাদী কর্মকাণ্ড নজর কাড়ে সবার।
গান গাইতে গাইতে নিজের পুরো মুখ কালি দিয়ে দিয়ে ঢেকে দেন রাহুল আনন্দ। রণেশ ঠাকুরের গানের ঘরে আগুন দেওয়ার মাধ্যমে শিল্পী ও শিল্পের প্রতি যে কলঙ্কজনক ঘটনা ঘটেছে, মুখে কালি মাখিয়ে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানান তিনি। এসময় নিজের গান ও ছবি আঁকার খাতা ছিঁড়েও প্রতিবাদ জানান রাহুল আনন্দ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন আয়োজনের সমন্বয়ক উজ্জ্বল দাশ। প্রথমেই গান পরিবেশনায় অংশ নেন বাউল রণেশ ঠাকুর। এছাড়া বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পী বাপ্পা মজুমদার, কনক আদিত্য, বাউল শফি মণ্ডল, বাউল বশির উদ্দিন সরকার, সূর্যলাল দাস, সৈয়দ হাসান টিপু, পিন্টু ঘোষ, আশিক, শিবু কুমার শীল, কলকাতার শিল্পী দেব চৌধুরী ও রাজীব দাশ, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী তাজুল ইসলাম, লন্ডন প্রবাসী অমিত দে, গৌরী চৌধুরী ও সোহিনী আলম, জার্মানি প্রবাসী শবনম সুরিতা, অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী পারমিতা দে প্রমুখ অংশ নেন।
প্রবাসী বাঙালিদের এই আয়োজনের সহযোগী ছিলো সিলেটটুডে ২৪, নগরনাট ও দাশ এন্ড কোং।
প্রসঙ্গত, রণেশ ঠাকুর দিরাইয়ের প্রয়াত বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের অন্যতম শিষ্য। গত ১৭ই মে মধ্যরাতে দিরাইয়ের উজানধল গ্রামে তার গানের আসরের ঘরে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ওই ঘটনার একদিন পর দিরাই থানায় রণেশ ঠাকুর মামলা করেন। এ ঘটনায় এক যুবককে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।