জেলার সংবাদ, বিশেষ প্রতিবেদন

চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি জাহাজ ঘিরে গড়ে উঠেছে চোরাচালান সিন্ডিকেট

ডিবিসি নিউজ ডেস্ক

ডিবিসি নিউজ

বৃহঃস্পতিবার ৬ই মে ২০২১ ০৯:৩২:১২ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গরে আসা বিদেশি জাহাজগুলো ঘিরে গড়ে উঠেছে শক্তিশালী চোরাচালান সিন্ডিকেট।

চক্রটি জাহাজের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে অপরিশোধিত ক্রুড, সয়াবিন, পাম অয়েল, ডিজেল, ফার্নেস অয়েল থেকে শুরু করে চাল, ডালসহ বিভিন্ন পণ্য অবৈধভাবে এনে বিক্রি করছে।

এদিকে একের পর এক তেলের চালান আটক করা হলেও থামানো যাচ্ছে না চোরাকারবারীদের। সরকার হারাচ্ছে বিপুল রাজস্ব। চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গর ও কর্ণফুলী নদীকেন্দ্রিক গড়ে উঠেছে জ্বালানি ও ভোজ্য তেলের প্রভাবশালী চোরাই সিন্ডিকেট।

সম্প্রতি ১৩ হাজার লিটার অপরিশোধিত পাম অয়েলসহ বাল্কহেড তানিশাকে আটক করে কোস্টগার্ড। পাম অয়েলকে সয়াবিন তেল বলে বিক্রির চেষ্টা করছিল সিন্ডিকেটের সদস্যরা। 
চট্টগ্রাম পূর্বজোন কোস্ট গার্ড লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম হাবিবুর রহমান বলেন,'এই তেল অপরিশোধিত এবং মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে। এ তেল খেলে ক্যান্সার হয়। আমাদের কাছে অনেক দিন থেকে তথ্য ছিলো। আমরা তাদেরকে ধরার চেষ্টায় ছিলাম।'

চোরাচালান সিন্ডিকেট সদস্যরা প্রতিদিন কোটি টাকার অবৈধ তেলসহ বিভিন্ন পণ্য বহির্নোঙ্গরে মাদারভ্যাসেল থেকে লাইটারেজের পর মাঝ নদীতে খালাস করে।  পরে সুযোগ বুঝে তা বাজারজাত করে।

সিমেন্ট ক্রসিং এর হারুণ, আবদুল্লাহ খান বাবলু, মনজু, কর্ণফুলীর শুক্কুর ও তার ছেলে মনির, শাহ মীরপুর বদরপুরার নূর বক্ ্র ও আইয়ুব, পতেঙ্গার বার্মা ইউসূফ, বড়পোলের মাহবুব, মনসুর, নতুন ব্রিজ এলাকার নুরু, সিসা হারুন, বেনসন নাছির, আনছার হাজী, মাঝিরঘাটের আমির, কাদের, বাংলাবাজারের রফিক, বিশু, সিরাজ, চর পাথরঘাটা ব্রিজঘাটার খোরশেদ, আলী, শিকলবাহার নুুরুচ্ছফা, রফিক।

আটক বাল্কহেড এফবি তানিশার মালিক মোহাম্মদ হারুন জানান,'আমার চোরাই কাজ করি না। মিথ্যা কথা।'

চিকিৎসকরা বলছেন, অপরিশোধিত পাম অয়েলে ক্যান্সারসহ নানা জটিল রোগ হতে পারে। চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন,'এই যে পামওয়েল, আজকে ভাজা পোড়া বানানোর পর, তেলটা পরের দিনের জন্য রেখ দেয়। পরের দিন ওই তেল দিয়ে আবার ভাজা হবে। এতে হাইড্রকার্বন থাকে, এটা ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।'

শুধু ভোজ্য তেল নয়, রাষ্ট্রীয় তেলের ডিপু ঘিরে প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে চলছে ক্রুড, ফার্নেস অয়েল, ডিজেলসহ বিভিন্ন তেলের চোরাচালান বাণিজ্য। চট্টগ্রাম নৌ পুলিশ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন,'দীর্ঘ দিনে তাদের শেকড় গজিয়ে বড় চক্রে পরিনত হয়েছে। পাচার চক্রের বিরুদ্ধে আমরা বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা জিরো টলারেন্স লেভেলে আছি।'

প্রশাসনকে ম্যানেজ করে তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান পদ্মা, মেঘনা, যমুনা থেকে বছরের পর বছর চোরাই পথে লোপাট হচ্ছে সরকারি তেল।

আরও পড়ুন