বাংলাদেশ, জাতীয়, রাজনীতি, অপরাধ, শিক্ষা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন দশকে ২১ খুন

মো. হামিদুর রহমান

ডিবিসি নিউজ

রবিবার ১৩ই অক্টোবর ২০১৯ ০৮:১৬:৪১ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ৩০ বছরে ঘটেছে ২১টি হত্যাকাণ্ড। এর একটিরও বিচার হয়নি। শুধু তাই নয় হত্যাকাণ্ডের পর গঠিত তদন্ত কমিটির কোনো প্রতিবেদনই দেখেনি আলোর মুখ।  ফলে এসব হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা রয়ে গেছে এখনো অধরা। 

আশির দশকের আগ পর্যন্ত মুক্তবুদ্ধি, আর প্রগতিশীল রাজনীতির পদচারনা ছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৮৬ সালে জাতীয় ছাত্রসমাজ নেতা হামিদের হাত কেটে ক্যাম্পাসে সহিংসতা শুরু করে ছাত্রশিবির। কাটা কব্জি নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে মিছিল করেছিল শিবির কর্মীরা। 

২০০১ সালে ফতেয়াবাদ ছড়ারকুলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতা আলী মর্তুজাকে ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করে শিবির ক্যাডাররা। জোট সরকারের আমলে এ ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলার অভিযোগপত্র থেকে নাম বাদ দেয়া হয় শিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ কয়েকজনকে আধিপত্য বজায় রাখতে ক্যাম্পাসে শিবির ক্যাডাররা কেড়ে নিয়েছে মর্তুজার মতো আরও ১৩টি তাজা প্রাণ।

নিহত ছাত্রলীগ নেতা আলী মর্তুজার ভাই আলী নাছের চৌধুরী বলেন, ১৮ বছর পার হয়ে গেলেও আমি আমার ভাইয়ের হত্যার বিচার এখনো পাইনি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন পর্যন্ত যতগুলো হত্যাকান্ড ঘটেছে এর বেশিরভাগই জামায়াত শিবির দ্বারাই হয়েছে।

শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয় রাজনৈতিক সহিংসতায় চট্টগ্রামে গত চার দশকে অন্তত ৫০ ছাত্র নিহত হয়েছেন। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছার অভাবে এসব হত্যাকাণ্ডে জড়িত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যায়নি। 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আশরাফী নিতু বলেন, ক্ষমতাসীন দলের প্রতি যে একটা দুর্বলতা বা নির্লিপ্ততা এটাই আমার মনে হয় সব সময়ের জন্য দায়ী। সুস্থ রাজনীতি ধারা না থাকা এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণেই ছাত্রহত্যা দিন দিন বাড়ছে। 

এসব হত্যাকান্ডের পর গঠিত তদন্ত কমিটির কোন সুপারিশ আজও বাস্তবায়ন হয়নি। রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে বিচার সম্পন্ন হতে পারেনি বলে জানান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শিরীন আক্তার।

তিনি বলেন, এসব মামলাগুলো কিন্তু সরকারের আয়ত্ত্বেই থাকে।তবে আমরা চেষ্টা করবো আমাদের এখান থেকে সুপারিশগুলো যাতে ঠিকমত যায়।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নিহতদের বেশিরভাগই ছিলেন ছাত্রলীগ ও ছাত্রদল নেতাকর্মী। এর বাইরে শিবির ও ছাত্র ইউনিয়নের কর্মীরাও রয়েছেন। সাধারণ শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, রাজনৈতিক সহিংসতার জন্য দায়ীদের শাস্তি না হওয়ায় বারবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। 

আরও পড়ুন