ইলন মাস্কের স্পেস এক্স প্রতিষ্ঠান থেকে ছোড়া একটি রকেট চাঁদের পৃষ্ঠে আঘাতের পর বিস্ফোরিত হতে যাচ্ছে। বিবিসি জানায়, ২০১৫ সালে ফ্যালকন নাইন বুস্টার নামের ওই রকেটটি মহাকাশে পাঠানো হয়।
আবহাওয়া পর্যবেক্ষণকারী একটি স্যাটেলাইট নিয়ে যায় সেটি। তবে জ্বালানি শেষ হয়ে যাওয়ায় মিশন শেষে পৃথিবীতে ফিরতে পারেনি রকেটটি। সাত বছর ধরে মহাকাশেই অনিয়ন্ত্রিত অবস্থায় রয়েছে সেটি। মার্চের প্রথম সপ্তাহেই চাঁদের সঙ্গে এর সংঘর্ষ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। চারটন ওজনের ধাতব রকেটটি চন্দ্রপৃষ্ঠে বিস্ফোরিত হলেও তার প্রভাব খুব বেশি হবেনা বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তবে ভবিষ্যতে মহাকাশের এসব বেড়ে চলা আবজর্না থেকে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে বলে সতর্ক করেছেন তারা।
২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা থেকে একটি আবহাওয়া স্যাটেলাইট নিয়ে মহাকাশের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় ফ্যালকন নাইন নামের এই রকেট।
কিন্তু স্যাটেলাইটটিকে তার কক্ষপথে পাঠানোর পর এর ইঞ্জিনে গোলযোগ দেখা দেয়। ইঞ্জিন ধীরে ধীরে পুড়ে গিয়ে রকেটটির একাংশ পরিত্যক্ত হয়ে যায়।
যথেষ্ট উচ্চতায় চলে যাওয়ায় পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ফিরে আসার মতো সক্ষমতা হারিয়ে ফেলে রকেটটি। এটি এমন এক জায়গায় গিয়ে ঠেকে যেখানে পৃথিবী ও চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ বল আবার বিদ্যমান রয়েছে। সুতরাং ২০১৫'র ফেব্রুয়ারি থেকে রকেটটি একটা বিশৃঙ্খল কক্ষপথ ধরে পৃথিবী ও চাঁদের আশেপাশে ঘুরতে থাকে।
মহাকাশ পর্যবেক্ষকরা বলছেন, প্রায় চার মেট্রিক টনের এই রকেট আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সেকেন্ডে ২ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার গতিতে চাঁদের গায়ে আছড়ে পড়বে।
সফটওয়্যার দিয়ে পৃথিবীর আশেপাশের বস্তু, গ্রহাণু, ক্ষুদ্র গ্রহ এবং ধূমকেতুর গতিবিধি নির্ণয় করা বিল গ্রে জানান, ফ্যালকন নাইন আগামী ৪ঠা মার্চ চাঁদের নিরক্ষরেখার কাছাকাছি একটি অঞ্চলে গিয়ে আঘাত হানবে।
'চাঁদের গায়ে এমন স্পেস জাংক আছড়ে পড়ার নজির আর আছে বলে জানা নেই আমার,' বলেন গ্রে।
সংঘর্ষটি পৃথিবী থেকে দেখা যেতে পারে কি না, এ ব্যাপারে গ্রে বলেন, এই সম্ভাবনা খুবই কম।
তিনি বলেন, পৃথিবী থেকে চাঁদের যে অংশ দেখা যাচ্ছে তার অপর পাশে ঘটনাটি ঘটবে। আর এপাশে ঘটলেও আমরা দেখতে পেতাম কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে। কারণ অমাবস্যার কয়েক দিন পরই ঘটনাটি ঘটবে।