বাংলাদেশ, জাতীয়, অর্থনীতি, বিশেষ প্রতিবেদন, প্রবাস

চার দশকেও তৈরি করা যায়নি বিদেশ ফেরত কর্মীদের ডাটাবেজ

ডিবিসি নিউজ ডেস্ক

ডিবিসি নিউজ

মঙ্গলবার ১লা জুন ২০২১ ১২:০৪:৫৭ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

চার দশকের বেশি সময় আগে থেকে বিদেশে কর্মী যাচ্ছে। কিন্তু এতো বছরেও বিদেশ ফেরত বাংলাদেশি কর্মীদের কোন ডাটাবেজ তৈরি  করতে পারেনি সরকার।

ডাটাবেজ না থাকায় করোনার মধ্যে বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের জন্য দীর্ঘমেয়াদী কোন সহায়তা কার্যক্রমও পরিচালনা করতে পারছে না প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়। অভিবাসন সংশ্লিষ্টরা বলছেন বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষ ও ইমিগ্রেশন বিভাগের সমন্বয়ে সহজেই তৈরি করা সম্ভব এই ডাটাবেজ।

মহামারির মধ্যে লকডাউনে যখন শিল্প কলকারখানার উৎপাদন বন্ধ সেই দু:সময়েও রেকর্ড পরিমান রেমিটেন্স পাঠিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ বাড়িয়েছেন প্রবাসী কর্মীরা।

অথচ মহামারিতে চাকরি হারিয়ে ফেরা বিশাল সংখ্যক প্রবাসী কর্মীর তালিকাই তৈরী করতে পারছে না প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়।  পদ্ধতিগত কিছু ভুল নীতির কারণে বিভিন্ন সময় উদ্যোগ নিয়েও তা ব্যর্থ হয়েছে।

শুধু ডাটাবেজ তথ্য না থাকায় কোন কর্মী কতটা অসহায়ত্বের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, কিংবা পুনর্বাসনে কার কতটা সহায়তা, কীভাবে প্রয়োজন সেই সহায়তা দিতে পারছে না সরকার। বিএনএসকে সুমাইয়া আখতার বলেন,'তাদের কি সাপোর্ট দরকার সেটা কিন্তু আমাদের জানা নাই। ব্যক্তি সংগঠনকে রাষ্ট্র সেই স্পেস দিবে না।'

গেল ফেব্রুয়ারিতে ডাটাবেজ ব্যবস্থানার জন্য ইউরোপিয় ইউনিয়নের অর্থায়নে মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় একটি প্রকল্প শুরু হয়। বিদেশ ফেরত প্রবাসী কর্মীদের স্থানীয় ডেমো অফিসগুলোতে নাম নিবন্ধনের মাধ্যমে ডাটাবেজ ব্যবস্থাপনার প্রক্রিয়া শুরু করলেও প্রবাসী কর্মীরা তেমন সাড়া দেয় নি। ফলে কয়েক লাখ প্রবাসী কর্মী ফিরলেও এই ডাটাবেজে নাম নিবন্ধন করেছেন মাত্র ২২ হাজার কর্মী।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সচিব মনিরুছ সালেহীন বলেন,'আমরা এখানে লোকজনকে যে সংখ্যায় সার্টিফিকেট দিতে চাই; একটা সার্টিফিকেট দিতে সরকারকে ভর্তকি দিতে হয় দুই হাজার/ আড়াই হাজার টাকা। আমরা দিতে চাচ্ছি। কিন্ত দেয়ার জন্য লোক নাই।'

অভিবাসন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন বিভাগের সাথে সমন্বয়েই হতে পারে এই ধরনের ডাটাবেজ। শুধু উদ্যোগ ও সমন্বয়ের প্রয়োজন। অভিবাসন বিশেষজ্ঞ শরিফুল হাসান বলেন,'যারা বিদেশে কাজ করেন তাদের কাছে স্মার্ট কার্ড রয়েছে, কাজেই বিমান বন্দরে যদি এই কাজটা করা যায়, তবে কারা ফিরছেন, কতদিনের জন্য ফিরছেন? কাজটা সহজ হয়ে যাবে।'

রামরু তাসনিম সিদ্দিকী বলেন,'সিভিল এভিয়েশন এবং ইমিগ্রেশনের সহযোগীতার যারা ফিরছেন, সেখানে একটা এক্সট্রা ফর্ম দিয়ে এই ডেটা আমরা তৈরী করি। কিন্তু আমরা এই কাজটার ব্যাপারে বেশি দূর কিন্তু এগুতে পারিনি।'

এদিকে ব্র্যাক এক গবেষণায় বলছে, গেল বছর মহামারিতে দেশে ফেরা প্রবাসী কর্মীদের মধ্যে ৪৭ শতাংশই বেকার, যাদের আয়ের কোন উৎস নেই।  ফলে একদিকে তারা যেমন বিদেশে কাজ হারিয়ে দেশে ফিরছেন, অন্যদিকে অর্থাভাবে বেছে নিচ্ছেন অন্য পেশা।

আরও পড়ুন